জুমবাংলা ডেস্ক : গাইবান্ধার বাজারে সব ধরনের শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম আকাশ-পাতাল। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাজারে কাচা মরিচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১২০ টাকার ফুলকপি ৩ থেকে ৫ টাকা, ২০০ টাকার পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ১৫০ টাকার আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে সব ধরনের শীতের সবজির দামও একেবারে কম।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারগুলো শীতের সবজিতে ভরপুর। বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজিতে বাজারগুলো সেজেছে যেন এক রঙিন সাজে।
সরেজমিনে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলায় কয়েক দিন ধরে শীত কিছুটা কম অনুভূত হলেও শীতের সবজির ফলন আশাতীত হয়েছে। এলাকায় সবজির উৎপাদন এবং সরবরাহ বেশি থাকায় সকল প্রকার সবজির মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। শহরের বেশ কয়েকটি বাজার সরজমিনে ঘুরে এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সবজির সরবরাহ দ্বিগুণ। এতে ক্রেতারা খুশি হলেও বিক্রেতারা হতাশ।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে নতুন আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৫ থেকে ৬ টাকা, ফুলকপি ৩ থেকে ৫ টাকা, শীম ৩০টাকা, করলা ৫০ টাকা পেঁয়াজ দেশি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেশি টমেটো ২০ টাকা, মূলা ৪ থেকে ৫ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও গাজর ৫০ টাকা, বেগুন ৪০টাকা, কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লালশাক ও পুঁই শাক ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের পুরাতন বাজারের আড়তদার শামসুজ্জোহা সরকার বলেন, জেলায় এ বছর সবজির ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ দ্বিগুন। তই দামও কম। ফুলকপি মান ভেদে ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গাইবান্ধা নিচু এলাকা হওয়ায় সবজি দেড়িতে বাজারে আসে। তাই সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কম থাকায় সবজির দাম কম।
ওই বাজারের খুচরা বিক্রেতা জুল্লু মিয়া বলেন, এলাকায় সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি। যে কারণে প্রতিদিন সবজির দাম হ্রাস পাচ্ছে। শীতের সবজি দিয়ে বাজার ভরপুর। তিনি বলেন, গতকালই ফুলকপি ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আজ সেই ফুলকপি ৩ থেকে ৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। একই অবস্থা বাঁধাকপিরও বললেন বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সিপন সরকার।
বাজারে বগুড়া থেকে আসা মমিনুল হক নামের এক পাইকার বলেন, মুরিচ কিনেছি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে আর সবজির দাম নাই বললেই চলে। চাহিদা কম তাই দামও কম।
সদর উপজেলার কাটিহারা এলাকা থেকে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি করতে আসা কৃষক রুহুল আমিন বলেন, বাজারে সবজি বিক্রি করতে এসে আমরা হতাশ। উৎপাদনের খরচই উঠছে না। উৎপাদনের খরচ না উঠলে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়তে হবে।
বাজারে সবজি কিনতে আসা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল আলম বলেন, এখন শীতের সবজির মূল্য নাগালের মধ্যে রয়েছে। আমরা চাই শীতের সবজির মূল্য এমন থাকুক।
অন্যদিকে চালের ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মাছ, ডিমসহ সব ধরনের মাংস, তেল ও মসলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে। আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। সবজি পুরোদমে উঠা শুরু হওয়ার কারণে চাষিরা সবজির দাম পাচ্ছে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।