জুমবাংলা ডেস্ক : বিগত পাঁচ মাসে ৪২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ট্যাক্স জিডিপির অনুপাত বাড়ানো হলে এতে সাধারণ মানুষ অদূর ভবিষ্যতে লাভবান হবে বলেও জানান তিনি।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপির যে অনুপাত সেটি ২০২১ সালের পর থেকে খুব নেমে যাচ্ছে। করোনার পর থেকে এমন জায়গায় এসেছে, এ বছর গত পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। সেটি সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বিশ্বে বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও নিচের দিকে। অনুপাতের হার এমন জায়গায় চলে যাচ্ছে যে সেটি টেকসই না। বাংলাদেশের মানুষের ভালো থাকার জন্য ট্যাক্স জিডিপির রেশিও একটা জায়গায় আমাদের নিতেই হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাটের অনেক ফারাক ছিল। কোথাও ৩ শতাংশ কোথাও একটু বেশি, পুরোটাকেই আমরা চাচ্ছি সরলীকরণ করে ১৫ শতাংশ করতে। সরলীকরণ করা হলে লাভ হলো লিকেজ কমে আসে। এই লিকেজ কমানো আমাদের খুব দরকার। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমাদের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চেষ্টা করছে খরচ কত কমানো যায়। আগে বিদেশ সফরে ২৫০-৩০০ জনের বহর যেতো, আর এখন প্রধান উপদেষ্টা বিদেশে গেলে ৪০-৫০ জন যায়। তার মধ্যে নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোক বেশি যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতিতে দেখবেন সব জায়গায় কী পরিমাণ অপচয় করা হয়েছে। কর্ণফুলী টানেল করা হলো কত টাকা খরচ করে, তার ওই পাড়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিশ্রামের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা দিয়ে সেভেন স্টার হোটেল করলেন। এটা কার টাকায় করলেন, এ দেশের জনগণের টাকায়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘জনগণের টাকা কীভাবে লুটপাট আর অপচয় হয়েছে তার কিছু নমুনা আপনারা এখন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেখছেন। সেজন্য আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও এমন একটা হেলদি জায়গায় যাক, যাতে ইকোনমি গ্রোথ হয়। রেশিও কমে যাওয়া মানে হচ্ছে এমনও হতে পারে যে আপনি ঋণ শোধ করতে পারবেন না বা বাংলাদেশের উন্নয়নে যে অর্থ লাগে সেটি পাওয়া যাচ্ছে না। সেই জায়গা থেকে বিচার করে এটা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে এই টাকা ব্যয় হবে।’
বিভিন্ন সংগঠন ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে, বিকল্প উপায় বের করার তাগিদ দিচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের কথাগুলো শুনেছিলাম এটুকু বলতে পারি।’
জনগণের ওপর করের বোঝা কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা বলছি না যে প্রভাব পড়বে না। তবে এটা খুবই মিনিমাম হবে। আমরা মনে করি না যে খুব ব্যাপক প্রভাব পড়বে।’
আইএমএফ’র শর্ত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের ঋণ পাওয়া মুখ্য বিষয় না। আইএমএফের একটা বড় বিষয় হচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করার সুবিধা হচ্ছে ম্যাক্রো ইকোনমি স্থিতিশীলতার সেরা পরামর্শ দেয়। আইএমএফ যেখানে ঋণ দেয়, তার মানে হচ্ছে তাকে সামনে রেখে অন্যরা আসে। অন্য বলতে বিশ্বব্যাংক, আইডিবি, জাপান, এরা এসে দেখে যে আইএমএফের সার্টিফিকেট আছে, ম্যাক্রো ইকোনমির স্থিতিশীলতার দিকে যাওয়া হচ্ছে, তখন সবাই আসে। এটা বাংলাদেশের বাইরে থেকে প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট আনার জন্য অনেক বড় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের রেভিনিউ যত ভালো হবে মার্কেট এক্সচেঞ্জ রেট তত ভালো হবে। ইকোনমি স্থিতিশীল থাকা মনে জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল থাকা। আপনি হয়তো এক আর এক মিলিয়ে দুই দেখছেন, কিন্তু যারা প্ল্যান করেছেন তারা বোদ্ধা ইকোনমিস্ট। তারা জানেন কী করছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।