আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বড় পতনে পার হচ্ছে ভারতের শেয়ারবাজার। সম্প্রতি শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে দেশটির শেয়ারবাজারে। এর ফলে ধারাবাহিকভাবে দরপতন চলছে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জসহ অন্যান্য শেয়ারবাজারে। এর মধ্যে আজ বুধবার বাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্স ৫২২ পয়েন্ট কমেছে।
একদিনে এত পয়েন্ট কমায় হতাশ বিনিয়োগকারীরা। এ নিয়ে টানা পাঁচ কার্যদিবস ভারতের শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছেন ১৫ লাখ কোটি রুপি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগাকরীরা।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি করেছে। এর ফলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও উদ্বেগ বেড়েছে। যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা কাজে নাও আসতে পারে। এই যুদ্ধ যদি আরও বড় আঞ্চলিক সংকট তৈরি করে তাহলে এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত ইকোনমিক টাইমস সূত্রে জানা যায়, দেশটির শেয়ারবাজারের সেনসেক্স ও নিফটি সূচক টানা ৫ দিন ধরে নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। আজ বুধবার একদিনেই সেনসেক্স সূচক ৫২৩ পয়েন্ট পতন শেষে ৬৪ হাজার ৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর নিফটি ৫০ সূচকের পতন হয়েছে ১৬০ পয়েন্ট। দিনশেষে এ সূচকটি ১৯ হাজার ১২২ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে।
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দর কমেছে নিফটি মিডিয়ার। এই খাতের দর কমেছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আইটি খাতে দর কমেছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। আর নিফটি ব্যাংকের দশমিক ৭৪ শতাংশ দর কমেছে, যেখানে বেসরকারি খাতের কমেছে দশমিক ৯৯ শতাংশ।
এছাড়া নিফটি পিএসইউ ব্যাংকের দশমিক ১৭ শতাংশ এবং নিফটি মেটালের দশমিক ১৫ শতাংশ দর বেড়েছে। বাকি সব খাতের পতনের মধ্য দিয়ে ভারতের শেয়ারবাজারে লেনদেন শেষ হয়।
প্রগ্রেসিভ শেয়ারের ডিরেক্টর আদিত্য গাগ্গার এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধের কারণে ভূ-রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। এমন অনিশ্চয়তার প্রভাব শেয়ারবাজারের উপরও পড়েছে। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে ডলারের অস্থিরতা ও অপরিশোধিত তেলের ওঠানামা।
কোটাক সিকিউরিটিজের ইক্যুইটি রিসার্চের প্রধান (রিটেল) শ্রীকান্ত চৌহান বিশ্লেষণে বলেছেন, ভারতের শেয়ারের অধিক মূল্য এদ্বেগের একটি বড় কারণ। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারে বিনিয়োগ কমাচ্ছে।
এদিকে আজ নিফটি সূচকে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে টাটা স্টিলের। কোম্পানিটির শেয়ারে দাম বেড়েছে ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। দাম বৃদ্ধির দ্বিতীয় তালিকায় অবস্থান করছে কোল ইন্ডিয়া। এর কোম্পানিটির দাম বেড়েছে দশমিক ৯৮ শতাংশ। দশমিক ৮৩ শতাংশ দর বেড়ে তালিকার তৃতীয় স্থান দখল করেছে হিন্দালকো।
এদিকে নিফটিতে দর কমার শীর্ষে রয়েছে অ্যাপোলো হসপিটালস এন্টারপ্রাইজ। আজ কোম্পানিটির শেয়ারে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ দর কমেছে। দর কমার দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। আদানি গোষ্ঠীর এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের পতন হয়েছে ২ দশমিক ০৬ শতাংশ। আর এসবিআই লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ারে দর কমেছে ২ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতেই আদানি গোষ্ঠীর সব কোম্পানির শেয়ারে ব্যাপক দরপতন হয়েছিল। ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপের স্টক জালিয়াতি নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে বড় দরপতন হয়েছিলো।
টানা ৯ বছর ১ নম্বর স্থানে এই শহর, আর প্রথম হতে চাইছেন না শহরবাসী
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার জালিয়াতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল হিনডেনবার্গ রিসার্চ। এ ঘটনার জেরে সেদিন থেকেই আদানির বিভিন্ন তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দাম কমতে শুরু করেছিলো। আদানির কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক কোম্পানির শেয়ারের দামও কমে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।