জুমবাংলা ডেস্ক : ব্যাংকের সেবা নিতে গিয়ে বিভিন্ন হয়রানি কিংবা কাক্সিক্ষত সেবা না পাওয়ায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রায় পাঁচ হাজার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। তবে এসব অভিযোগের বড় অংশ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তিন হাজার ৬৩৩টি অভিযোগ করে। যার সব অভিযোগই নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরের অর্থবছর (২০২০-২১) গ্রাহকদের অভিযোগের সংখ্যা ছিল চার হাজার ৯৭৪টি। ওই সময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি হয় চার হাজার ৯৫০টি বা ৯৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে অভিযোগ বেড়েছে এক হাজার ৩৪১টি বা ৩৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রাহকদের মোট অভিযোগের ৬৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ ছিল বেসরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এরপর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ছিল ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ,৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ছিল ২ দশমিক ৪১ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। অন্যান্য ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগে ব্যাংকিং-সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ করা যায়। ই-মেইলের মাধ্যমে লিখিত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত ফরমে অনলাইনে, মোবাইল অ্যাপ এবং টেলিফোনে-এই চার উপায়ে অভিযোগ করার সুযোগ রয়েছে। সেবাসংক্রান্ত তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ১৬২৩৬ এই নম্বরে ফোন করে যে কেউ সমস্যা জানাতে পারেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে মোট আট হাজার ৬০৭টি অভিযোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে টেলিফোনের মাধ্যমে তিন হাজার ৭০৫টি, লিখিত চার হাজার ৬৯১টি, ওয়েবসাইটে ১৭৩টি এবং মোবাইল অ্যাপসে ৩৮টি অভিযোগ গ্রহণ করে।
জানা যায়, ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে সাধারণ ব্যাংকিং নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ করে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এক হাজার ৬৬টি অভিযোগ ছিল সাধারণ ব্যাংকিং নিয়ে। এছাড়া ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত ছিল ২১৮টি, নোটস অ্যান্ড কয়েন্স ৩২৩টি, গ্রাহক সেবায় অসন্তুষ্টি ২৫০টি, লিগ্যাল নোটিশ ৭৭টি, লোন অ্যান্ড অ্যাডভান্স ৬৩৪টি, ফিস অ্যান্ড চার্জ ২৮৫টি, লোকাল ট্রেড বিল ৩৫১টি, ফরেন ট্রেড বিল ৩৭২টি, চেক জালিয়াতি ২১টি, রেমিট্যান্স ২৩৬টি, কার্ড ৪১৫টি, মোবাইল ব্যাংকিং ১৯৯টি এবং অন্যান্য ৫২৭টি অভিযোগ করে গ্রাহকরা।
২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ ও হ্রাসের জন্য ১৩২টি বিশেষ পরিদর্শন চালায়। সবচেয়ে বেশি বিশেষ পরিদর্শন চালানো হয় বেসরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এর সংখ্যা ৮৪টি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২৬টি, শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকে ১৪টি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাতটি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের বিরুদ্ধে একটি পরিদর্শন কার্যক্রম চালানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিআইপিসি চালুর পর থেকে ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত এফআইসিএসডিতে অভিযোগ করেছেন ৪৩ হাজার ২৮৫ গ্রাহক। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৩ হাজার ২৬১টি অভিযোগ। অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এসময় লিখিত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৮৩টি। টেলিফোনে আসা অভিযোগ ছিল ১৮ হাজার ২০২টি। এখনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি ২৪টি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।