জুমবাংলা ডেস্ক : ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার নসিবগঞ্জ নুহালী এলাকার বাসিন্দা মরজিনা আক্তার মিম। ৩২ বছর বয়সী এই মিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি ৫ বছরে করেছেন আট বিয়ে। পরে সব স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে তাদের কাছ থেকে আদায় করেছেন দেনমোহরের ৭১ লাখ টাকা।
অভিযুক্ত একই এলাকার মোজ্জাম্মেল হকের মেয়ে। মোটা অংকে দেনমোহরের টাকা আদায় করতেই তিনি বিয়ে করতেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
মিমের বক্তব্য, কোনো ছেলেই মনের মতো না হওয়ায় এমনটা করেছেন তিনি। মিমের পরিবারের দাবি, কোনো ছেলে তাদের মেয়ের সঙ্গে সংসার করতে রাজি হয়নি। তাই ছেলেদের কাছ থেকে দেনমোহর পরিশোধ করিয়ে মেয়েকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০২১ সালে মোটা অঙ্কের টাকা দেনমোহর নির্ধারন করে মিম বিয়ে করেন রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে। পরে সেই সংসার করবেন না এবং তালাকের জন্য স্বামী রবিউল ইসলামের ওপর চাপ সৃষ্টি শুরু করেন মিম। একই সঙ্গে দেনমোহর পরিশোধ করতেও চাপ দিচ্ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিম একে একে ৮টি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালেই করেছেন সাতটি বিয়ে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে একটি,২০১৮ সালে একটি,২০১৯ সালে দুটি ও ২০২০ সালে ৩টি বিয়ে করেন তিনি। এসব বিয়র কিছুদিনের মাথায় ছাড়াছাড়ি করে প্রায় ৬৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মিম।
২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাঁও গ্রামের রবিউল ইসলাম এর সঙ্গে বিয়ে হয় মিমের। বিয়েতে ৮ লাখ টাকা দেনমোহর ধরা হয়। অবশেষে তালাক পেতে রবিউল ইসলামের পরিবারকে চাঁপ দিতে শুরু করেন তিনি। সেই সঙ্গে বাপের বাড়িতে গিয়ে স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা দায়েরের চাঁপ দিতে থাকেন।
মেয়েটির বর্তমান স্বামী রবিউল ইসলাম গতকাল সোমবার বলেন, ‘বিয়ের প্রথম থেকেই মেয়েটি সমস্যা করছিলো। বেশিরভাগ সময় বাবার বাসায় থাকতো সে। বিয়ের তিন মাস পরেই আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই তালাক দেবে বলে জানায়। পরে আমি খবর নিয়ে তার আগেও ৭টি বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পারি। এখন সে দেনমোহরের টাকার জন্যে আর তালাকের জন্যে আমাকে ও আমার পরিবারকে চাঁপ দিচ্ছে।’
এ বিষয় মেয়ের বাবা মোজ্জামেল হকের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে ১০টা বিয়ে করুক তাতে আপনাদের বা কারো কি সমস্যা। আমার মেয়ের সঙ্গে সংসার না করলে দেনমোহরের টাকা দিয়ে আমার ময়েকে তালাক দিতে হবে এটা স্বাভাবিক বিষয়। এনিয়ে অন্য কারো কিছু বলার সুযোগ নেই।’
অভিযুক্ত মরজিনা আক্তার মিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলন, ‘কোনো ছেলে আমার মন মতো হয়নি। সেজন্যই কারা সঙ্গেই সংসার টিক নাই আমার। জোড় করে সংসার করা জায় না।’
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার ৯ নম্বর সনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি। একটি মেয়ের এতগুলা বিয়ে আমার জানা ছিলো না। বিষয়টি জানার পর আমি মেয়ের বাবাকে ডেকেছিলাম। কিন্তু তার কথা বলার ধরণ ভালো না। বিষয়টি পরে দেখা হবে।
ঠাকুরগাঁও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান চৌধুরী জানান, বিয়ের সময় দেনমোহরের টাকা ধার্য করার পরেই সেই টাকার মালিক স্ত্রী। আইন অনুযায়ী বিয়ের পর ছেলে বা মেয়ে যেই তালাক দিক না কেন দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।