স্পোর্টস ডেস্ক : ঝামেলার সঙ্গে নেইমারের যেন নিয়মিত বসবাস। কিন্তু এবারের ঝামেলা তার জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ কাতার বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র এক মাস আগে পিএসজির এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে হাজির হতে হবে বার্সেলোনার আদালতে। অপরাধ প্রমাণিত হলে পাঁচ বছরের জেল হতে পারে নেইমারের।
২০১৭ সালে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফি’তে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে নাম লেখানোর পর থেকেই মূলত বিষয়টি সামনে আসে। এর আগে কাতালুনিয়ায় যতদিন ছিলেন বিষয়টি নিয়ে তেমন নাড়াচাড়া করেনি ক্যাম্প ন্যু। কিন্তু যেই তিনি প্যারিসে পাড়ি জমালেন, এরপরই তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ তোলা হলো, যা প্রমাণিত হলে এমনকি পাঁচ বছরের জন্য জেলেও যেতে হতে পারে তাকে।
ঘটনার শুরু ২০১১ সালে। বার্সেলোনার পক্ষে সাবেক সভাপতি সান্দ্রো রোসেল নেইমারদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। সে সময়ে নেইমারের মূল্যের ৪০ ভাগ মালিকানা ছিল ডিআইএসের। প্রকাশ হয়, সান্তোস থেকে ১৭.১ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে নেইমারকে কিনে নেয় বার্সেলোনা। যার ফলে ওই অর্থের ৪০ ভাগ পায় ডিআইএস। কিন্তু পরে জানা যায় নেইমারকে কিনতে আসলে ৫৭.১ মিলিয়ন খরচ হয়েছে। এই সত্য জানতে পেরে ব্রাজিলিয়ান বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি অভিযোগ করে দলবদলের আসল অঙ্ক গোপন করে তাদের ঠকানো হয়েছে।
অর্থের হেরফের এখানেও শেষ হয়নি। পরবর্তীতে প্রকাশ হয়, রিয়াল মাদ্রিদ নয়, বার্সেলোনাকেই বেছে নেওয়া নিশ্চিত করতে নেইমার ও তার বাবাকে আরও বড় অঙ্কের অর্থ দিয়েছে রোসেল। যার ফলে নেইমারকে আনতে বার্সেলোনার প্রায় ৮৩.৩ মিলিয়ন ইউরোর মতো খরচ হয়! আর এই অর্থের পরিমাণ গোপন রাখার ফলে বিশাল অঙ্ক হাতছাড়া হয় সান্তোসেরও। ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি নেইমার ও তার বাবার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করে। ২০১৮ সালে সেই মামলাতেই প্রথমে দুই বছরের শাস্তির কথা উঠলেও তা বেড়ে ছয় বছর হতে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছিল।
এদিকে আজ বুধবার স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, স্পেনের ট্যাক্স কর্তৃপক্ষ নেইমারকে দুই বছর জেল খাটাতে চায়। সেই সঙ্গে আর্থিক জরিমানা হিসেবে তারা ১০ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছে। জানা গেছে, আগামী ১৭ অক্টোবর এই মামলার শুনানি হবে বার্সেলোনার আদালতে।
অন্যদিকে ব্রাজিলিয়ান কোম্পানি ডিআইএস নেইমারের পাঁচ বছরের সাজার আবেদন করেছে। সেই সঙ্গে আর্থিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তারা ১৫০ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছে। নেইমারের সঙ্গে তার বাবা-মা, বার্সার সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট রোসেল ও বার্তমেউ, সান্তোসের সাবেক কোচ এবং বার্সেলোনা ক্লাবের বিপক্ষেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
অপরাধ প্রমাণিত হলে নেইমারের বাবাকে দুই বছর এবং তার মাকে এক বছর জেলের শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু ব্রাজিল ভক্তদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ তো নেইমার। যদি সত্যিই তাকে শাস্তি পেতে হয়, তাহলে সেলেসাওরা দলের সেরা তারকাকে হারাবে। শুধু ব্রাজিল কেন, পিএসজির জন্যও এটা বড় দুঃসংবাদ হয়ে আসবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।