জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ধানের দাম কম। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কৃষক স্বপন মিয়া বলেন, এক মণ ধান বিক্রি করেও এক কেজি গরুর গোশত কেনা যায় না, ৫০ কেজি ধানে এক কেজি মাংস মিলবে। অথচ এক মণ ধান উৎপাদনে আমাদের খরচ ৮শ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা। শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে ১১শ টাকা খরচ হয়ে যায়। ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ৭শ টাকা।
কৃষক হারুন অর রশিদ বলেন, এক বাজার থেকে আরেক বাজারে ধান নিয়ে গেলেও মহাজনরা ধান কিনতে চায় না, মনে হয় আমরা ধান উৎপাদন করে ‘মহাপাপ’ করেছি। এই সিন্ডিকেট না ভাঙলে কৃষক বাঁচবে না।
কৃষক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘বেশি বেশি আলু খান, ভাতের উপর চাপ কমান- সেই স্লোগান এখন পাল্টে গেছে। এখন নতুন স্লোগান দিতে হবে- ভাত খান, ভাত খান-আলুর ওপর চাপ কমান।’
বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার আয়োজিত কৃষক সমাবেশে কৃষকরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
তারা বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এ বছর উৎপাদন খরচ বাড়ায় প্রতি মণ ধানের মূল্য কমপক্ষে ১ হাজার ৫শ টাকা করতে হবে, ধানের আড়ত ও মহাজনদের ঘরে প্রতি মণে ২-৩ কেজি অতিরিক্ত নিচ্ছে। ঢলতা প্রথা চালু করে ৪০ কেজি মণের স্থলে ৪২-৪৩ কেজি ধান নিচ্ছে, এ প্রথা বাতিল করতে হবে। সরকার ঘোষিত মূল্যে ও শর্তে সাধারণ কৃষক খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারছে না। এখন প্রযুক্তি আছে, তা ব্যবহার করে কৃষকের জমি থেকে সরাসরি ভিজা ধান ক্রয়ের দাবি জানাচ্ছি।
প্রতি মণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৫শ টাকা, সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় ও ঢলতা প্রথা বাতিলের দাবিতে গৌরীপুর-বেখৈরহাটি সড়কের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের বীর আহাম্মদপুর ফকিরবাড়ির মোড়ে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষক সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতি গৌরীপুর শাখার সভাপতি মজিবুর রহমান ফকির। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসনাত। বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন হেলিম, কৃষক মো. স্বপন মিয়া, ফখর উদ্দিন মাস্টার, হারুন অর রশিদ, লুত মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া, উসমান গণি, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় ৩২ টাকা দরে ১ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন ধান ও ৪৫ টাকা দরে ১২ হাজার ৯০৯ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ক্রয় করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৪১০ হেক্টর। এর মধ্যে উফশী ১৫ হাজার ২শ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের ৫ হাজার ২১০ হেক্টর।
উপজেলা কৃষক সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান ফকির জানান, কৃষকের উৎপাদিত বিক্রয়যোগ্য ধানের ৫০ ভাগের একভাগও সরকারিভাবে কেনা হচ্ছে না। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় কেন্দ্র চালুর দাবি জানাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।