জুমবাংলা ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে আবারও স্বল্পমূল্যে গরু প্রস্তুত করেছে একটি খামার। মাত্র ৫০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে দেশি জাতের স্বাস্থ্যসম্মত গরু।
Table of Contents
এই খামারে শুধু নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যই নয়, মধ্যবিত্ত ও বিত্তবানদের সামর্থ্য অনুযায়ী বিভিন্ন মূল্যের গরুও রয়েছে। ফলে কোরবানির পশুর হাট শুরু হওয়ার আগেই এখানে অগ্রিম বুকিং নেওয়া হচ্ছে।
গরুর অস্বাভাবিক দামের প্রতিযোগিতা এবং এর বিকল্প
কোরবানির ঈদ এলেই হাটগুলোতে উচ্চ মূল্যে গরু বিক্রির প্রতিযোগিতা দেখা যায়। অনেক সময় গরুদের নাম দেওয়া হয় দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র তারকাদের নামে, যা ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্রেতারা প্রতারণার ভয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন। তাদের কথা চিন্তা করেই ইমপেক্স এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যে পশু কেনার সুযোগ করে দিয়েছে।
খামারের অবস্থান ও মূল্যমান অনুযায়ী গরুর ধরন
জেলার বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর মাধবপাশা এলাকায় অবস্থিত এই খামারে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে দেশি জাতের সুস্থ গরু। এছাড়া, ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যের বিভিন্ন গরুও রয়েছে এখানে।
এই খামারে রয়েছে ব্রাহমা (যুক্তরাষ্ট্র), শাহিওয়াল, সিন্ধি, হরিয়ানা, কংক্রাজ (ভারত-পাকিস্তান), হলেস্টিন ফ্রিজিয়ান (অস্ট্রেলিয়া) এবং মীরকাদিমের বিখ্যাত হাসাসহ ১৫০টিরও বেশি গরু। তবে দেশি জাতের গরুর ওপরই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এখানে ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দামে অর্ধ শতাধিক দেশি গরু প্রস্তুত রয়েছে।
অন্যান্য কোরবানির পশুও রয়েছে
এই খামারে শুধু গরুই নয়, উন্নত জাতের মহিষ, খাসি ও ভেড়াও সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। মহিষ পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে চার লাখ টাকায়, খাসি ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় এবং ভেড়া ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
গরু রাখার সুবিধা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ
যারা পশু কিনে বাড়িতে রাখতে পারবেন না, তাদের জন্য খামারে গরু রাখার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। বুকিং দেওয়ার পর ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বিনা খরচে গরু রাখা যাবে খামারে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও বিভিন্ন সুবিধার কারণে রাজধানীসহ আশপাশের জেলা থেকে অনেক ক্রেতা ও দর্শনার্থী প্রতিদিন খামারে আসছেন।
খামারের বিশেষ যত্ন ও স্বাস্থ্যের বিষয়
খামারের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম শ্যামল জানান, অন্যান্য খামারের মতো মোটা-তাজাকরণের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। বরং প্রাকৃতিক উপায়ে গরু লালন পালন করা হয়। প্রতিটি গরুকে খাওয়ানো হয় কাঁচা ঘাস, ভুট্টা, খড়, গমের ভুষি, বুটের ছোলা ও মোট ৩১ প্রকার প্রাকৃতিক দানাদার খাবার।
গরুগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেন খামারের নিজস্ব পশু চিকিৎসক। কর্মীরা নিয়মিত পরিচর্যা করেন গরুগুলোর।
ক্রেতাদের আস্থা ও খামারের নীতি
সাইফুল ইসলাম শ্যামল বলেন, “সঠিক ওজন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সুস্থ গরু বিক্রির কারণে আমার খামারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। গত বছরের ক্রেতারাই এবার আবার বুকিং দিচ্ছেন। ইনশাআল্লাহ, ঈদের আগেই সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “যে ওজন বলব, ইনশাআল্লাহ এক কেজিও কম হবে না বরং বেশি হবে। কেউ যদি কমপ্লেইন করে যে গরুর ওজন কম, আমি সাথে সাথে ক্ষতিপূরণ দেব। আমি প্রতারণা করে ব্যবসা করি না, সততার সাথে ব্যবসা করি।”
ভিডিও কলে গরু দেখে বুকিংয়ের সুবিধা
চাঁদ রাত পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খামারের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কলের মাধ্যমে গরু দেখে বুকিং দিতে পারবেন ক্রেতারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।