জুমবাংলা ডেস্ক : দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পাটজাত পণ্যের সমন্বয়ে নির্মিত একটি সুপার কার এখন বাংলাদেশের মহাসড়কে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেছে। মাত্র ৫২ ঘণ্টায় তৈরি এই তিন চাকার সুপার কার দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। গাড়িটির নির্মাতা তরুণ উদ্ভাবক বুলবুল, যিনি সীমিত সরঞ্জাম, নিজের মেধা এবং পরিশ্রম দিয়ে এই চমৎকার উদ্ভাবন বাস্তবায়ন করেছেন।
Table of Contents
দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত সুপার কারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
এই সুপার কারটির চেসিস তৈরি হয়েছে পুনর্ব্যবহৃত স্টিল দিয়ে। গাড়ির ছাদ ও গা তৈরি করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্য দিয়ে, যা বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির একটি উদাহরণও বটে।
ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে একটি গো-কার্ট ইঞ্জিন, যার সাহায্যে এখন পর্যন্ত গাড়িটি সর্বোচ্চ ১৬৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলেছে। উদ্ভাবক বুলবুল আশাবাদী, ভবিষ্যতে এই গাড়ি ৩০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতেও ছুটতে পারবে।
জ্বালানি সাশ্রয়ী ও বহুমুখী সক্ষমতা
বুলবুলের দাবি অনুযায়ী, তার তৈরি এই সুপার কার প্রচলিত গাড়ির তুলনায় অনেক কম খরচে চলতে পারে। যেখানে সাধারণ একটি গাড়ি চালাতে ১ হাজার টাকা লাগে, সেখানে তার গাড়ি মাত্র ৩০০ টাকায় সমতুল্য পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। এটি পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল এমনকি কেরোসিন দিয়েও চলতে পারে। ভবিষ্যতে এতে হাইড্রোজেন রিফাইন প্রযুক্তি সংযোজন করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা ও সামরিক ব্যবহারে উপযোগী
এই সুপার কারটির নকশায় দুইজন আরোহীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটি ব্যবহার করতে পারে পেট্রোলিং, পুলিশি তৎপরতা বা কৌশলগত সামরিক কাজে। এতে যেকোনো ধরনের ইকুইপমেন্ট সংযুক্ত করার সুবিধাও রাখা হয়েছে, যা ব্যবহারিক দিক থেকে এটিকে আরও কার্যকর করে তুলেছে।
নামহীন এই গাড়িই বুলবুলের ১৯তম উদ্ভাবন
এই সুপার কারটির এখনো কোনো নাম নেই, তবে এটি সি-০১৯ সিরিয়াল নম্বর দ্বারা চিহ্নিত। এটি বুলবুলের নিজ হাতে তৈরি ১৯তম গাড়ি। তিনি জানান, ভবিষ্যতে একটি উপযুক্ত নাম নির্ধারণ করবেন এবং যদি কারো সহায়তা পান, তবে আরও আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করে গাড়িটিকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান।
প্রতিবন্ধীবান্ধব যান তৈরির পথ ধরেই শুরু হয়েছিল যাত্রা
উল্লেখ্য, বুলবুল শুধু সুপার কারই নয়, প্রতিবন্ধীদের উপযোগী গাড়িও তৈরি করে থাকেন। এখান থেকেই তার উদ্ভাবনের যাত্রা শুরু। উচ্চশিক্ষা না থাকলেও নিজের সাহস, পরিশ্রম ও স্বপ্ন দিয়েই দেশীয় প্রযুক্তিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা
জাতীয় গর্ব হতে পারে এই সুপার কার
বুলবুলের মতো তরুণ উদ্ভাবকদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই সুপার কার শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতিরই নয়, বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও গর্বের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। সরকার ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় একদিন হয়তো এই উদ্ভাবন আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।