জুমবাংলা ডেস্ক : মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে ৫২ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে বিক্রি করে ফেরার পথে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শনিবার ভোরে কক্সবাজার উপকূলের নাজিরারটেক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র-গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর শেখ ইউসুফ আহমেদ। তিনি জানান, গ্রেফতাররা সবাই আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য। পাচার হওয়াদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী ৮ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক।
গ্রেফতাররা হলেন- মহেশখালীর উপজেলার ছোট মহেশখালীর সিপাহির পাড়ার গোলাম কুদ্দুসের ছেলে শাহ জাহান (৩৭), ঘটিভাঙা পূর্বপাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ পারভেজ (২৩), একই এলাকার আমির হোসেনের ছেলে আবদুল মাজেদ (২৭), ফজল করিমের ছেলে আমির মো. ফয়সাল (২৪), আমির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাকের ( ৩০) ও মো. মীর কাসেমের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫)।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, দুইটি থ্রিকোয়াটারগান, চার রাউন্ড কার্তুজ, দুইটি রামদা, একটি স্যাটেলাইট ফোন, একটি কম্পাস, একটি জিপিএস ডিভাইস, ১৬টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিম কার্ড ও পাচারে ব্যবহৃত একটি ফিশিং ট্রলার জব্দ করা হয়।
র্যাব-১৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর শেখ ইউসুফ আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের কিছু সদস্য কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক চ্যানেলে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে অভিযানে যায় র্যাব। এ সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে অস্ত্র-গুলিসহ তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, এ চক্রের বিদেশি সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার হয়। পাশাপাশি জিপিএসের মাধ্যমে সাগরের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে মানবপাচার করে আসছিল তারা।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের উচ্চ বেতনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করানোর প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য তাদের রাজি করে তারা। এ জন্য তাদের জনপ্রতি তিন লাখ টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে। প্রাথমিকভাবে তাদের থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ করে। বাকি টাকা তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করবে মর্মে চুক্তি করে।
মেজর শেখ ইউসুফ আহমেদ জানান, চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের মানব পাচারকারীদের প্ররোচনায় অন্য দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা করে। তাদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে বিক্রি করে দেয়। নারীদের পতিতালয়ে কাজ করতে বাধ্য করে।
তিনি আরও জানান, পাচার করা বাবদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণের চুক্তির বিষয়ে গ্রেফতাররা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ চক্রের আরও সদস্যদের চিহ্নিত করতে পেরেছে র্যাব। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।