জুমবাংলা ডেস্ক : স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যার প্রতি লিটার ১৬৬ টাকা দরে দাম পড়বে ৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বসুন্ধরা মাল্টি ফুডস লিমিটেড এই সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২৮ কোটি লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যেখানে আগেই ৬ লাখ ৩৩ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের চুক্তি সই হয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অংশ হিসেবে এখন ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
মোট চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো দেশে (সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসহ) টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী প্রায় ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে টিসিবি কর্তৃক স্থানীয়ভাবে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে এই পরিমাণ সয়াবিন তেল কিনতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৬ অনুসরণ করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) আহ্বান করা হয়। দরপত্রের বিপরীতে আংশিক অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৫৫ লাখ লিটার এর প্রস্তাব দাখিলের সুযোগ রাখা হয়।
দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ২টি পত্রিকায় গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত হয়, যা টিসিবি ও বিপিপিএ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৬১ (৫) অনুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন স্থানীর ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহ, কার্যসম্পাদন বা ভৌত সেবার জন্য বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশের তারিখ থেকে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের জন্য ন্যূনতম ২৮ দিন সময় ধার্য থাকলেও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক গত ৪ জুন তারিখে সভায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য স্থানীয় দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রনয়ণ ও দাখিলের সময়সীমা ২৮ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন অনুমোদন করা হয়।
সে পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্র দাখিলের সর্বশেষ তারিখ চলতি বছরের ৫ নভেম্বর। আলোচ্য দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারিখ পর্যন্ত।
এই দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি কর্তৃক ৫ নভেম্বর তারিখে দরপত্র উন্মুক্ত করা হলে একটি দরপত্র জমা পড়ে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্টস ২ লিটার বোতলে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৬ টাকা দর ধরে, তবে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাপ্তরিক মূল্য ১৬৮.৬৮ টাকা। সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটারে ২.৬৮ টাকা কম দর উল্লেখ করেছে।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত একটি দরপত্র তুলনামূলক বিবরণী এবং সংযুক্ত দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে। দাখিলকৃত দরপত্রটি রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত প্রস্তাবিত দরের বিষয়ে আলোচনা করে। আলোচনা শেষে পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৯৯ (অ) (আ) অনুযায়ী রেসপনসিভ দরদাতা বসুন্ধরা মাল্টি ফুডস লিমিটেড এর দরপত্রে প্রস্তাবিত ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেলের সঙ্গে প্রতি লিটার ১৬৬ টাকা দরে অবশিষ্ট ১ লাখ ৬৫ হাজার লিটারসহ সম্পূর্ণ পরিমাণ অর্থাৎ ২ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করার জন্য সম্মতি চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি অবশিষ্ট পরিমাণ সয়াবিন তেল সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করে।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক রেসপনসিভ দরদাতার কাছ থেকে দরপত্রে প্রস্তাবিত ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল দুই লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার অগ্রিম আয়কর, প্রযোজ্য মূসক ও টিসিবি’র গুদামসমূহে পরিবহন খরচসহ ১৬৬ টাকা দরে মোট ৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যে ক্রয়ের সুপারিশ করা হয়।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায়, রেসপনসিভ দরদাতা কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দর দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ২.৬৮ টাকা কম।
৫ নভেম্বর টিসিবির বাজার তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় বাজারে সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার গড় খুচরা মূল্য ১৬৭.৫০ টাকা, যা থেকে প্রস্তাবিত দর প্রতি লিটারে ১.৫০ টাকা কম।
সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি বসুন্ধরা মাল্টি ফুডস লিমিটেডকে প্রতিলিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৬ টাকা দরে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের জন্য সুপারিশ করেছে। এ-সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে টিসিবি সূত্রে জানা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।