লাইফস্টাইল ডেস্ক : মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়লে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে যত্ন নিতে পারেন চুলের। এগুলো কেবল চুল পড়াই বন্ধ করবে না, পাশাপাশি চুল করবে ঝলমলে ও নরম। তবে ঘরোয়া উপায়ে রাতারাতি চুল পড়া বন্ধ করা সম্ভব নয়। এগুলো কাজ করে ধীরে। ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া বন্ধ না হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন অবশ্যই।
জেনে নিন চুল পড়া নিয়ন্ত্রণের কিছু ঘরোয়া উপায়।
১। ডিম
অ্যামিনো অ্যাসিডের চমৎকার উত্স ডিম। ডায়েটের অংশ হিসেবে ডিম খাওয়ার পাশাপাশি মাথার ত্বকে ডিমের প্যাক লাগাতে পারেন। এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড লেসিথিনের উপস্থিতির কারণে চুল পড়া রোধ করতে পারে ডিম। ডিমের কুসুমে পানিতে দ্রবণীয় পেপটাইড থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে পারে। ডিমে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলে পুষ্টি জোগায় এবং ভাঙাজনিত চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। ডিমের প্যাক তৈরির জন্য একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে এরপর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
২। অ্যালোভেরা
চুল পড়া রোধে অ্যালোভেরা অন্যতম জনপ্রিয় ঘরোয়া প্রতিকার। টাটকা অ্যালোভেরা জেলে অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন এবং চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ যেমন জিঙ্ক, কপার ইত্যাদি পাওয়া যায়। প্রোটিওলাইটিক এনজাইমও রয়েছে এতে। মাথার ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ম্যাসাজ করা হলে মৃত কোষ দূর হয় এবং পুষ্টি প্রবেশ করতে পারে চুলের গোড়ায়। এতে চুল পড়া কমে। শুষ্কতার কারণে মাথার ত্বকের প্রদাহ প্রতিরোধ করতেও এর জুড়ি নেই। ১ কাপ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল ও ২ টেবিল চামচ মেথির গুঁড়া মিশিয়ে নিন। রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে লাগান চুলে। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
৩। আমলকী
চুল পড়া রোধ করার জন্য চমৎকার আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া প্রতিকার হচ্ছে আমলকী। এটি ভিটামিন সি এর মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং একই সাথে ত্বকের কোষগুলোর পুনর্জন্ম নিশ্চিত করে। আমলকীর তেল চুলের বৃদ্ধির উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে এবং কার্যকরভাবে চুল পড়ার তীব্রতা কমায়। আমলকীর তেলের নিয়মিত প্রয়োগ চুলের অকাল ধূসরতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। প্যাক তৈরির জন্য কিছুটা নারিকেল তেল গরম করুন। এরসঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। ১ ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
৪। নারিকেলের দুধ
চুল পড়ার সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে নিরাময় করবে নারিকেলের দুধ। এতে উচ্চ পরিমাণে লরিক অ্যাসিড রয়েছে, যা মাথার ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শক্তিশালী অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যসহ এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। নারিকেলের দুধ প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা আপনার চুলের উপরিভাগ মেরামত এবং পুনর্নির্মাণ করতে পারে। পাশাপাশি চুলের ক্ষতি এবং ভাঙন কমাতেও কার্যকর এটি। ভিটামিন সি, ই এবং বি-কমপ্লেক্স ভিটামিনের মতো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান মেলে এই দুধে। প্রয়োজন মতো নারিকেলের দুধ সামান্য গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন ১৫ মিনিট। আরও ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে।
৫। জবা ফুল
ফসফরাস, রিবোফ্লাভিন এবং ক্যালসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে জবা ফুলে। এছাড়াও এতে ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। এতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। জবা ফুল ও জবা ফুলের পাতা ছেঁচে নারিকেলের তেল মিশিয়ে চুলে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে।
৬। মেথি
চুল পড়া রোধে আরেকটি সেরা ভেষজ হচ্ছে মেথি। বি১, বি৩ এবং বি৫ মেলে এতে, যা স্বাস্থ্যকর চুল বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। মেথির বীজে স্টেরয়েড স্যাপোনিনও থাকে, যা চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। মেথিতে থাকা লেসিথিন নামক একটি উপাদান চুলের গঠন উন্নত করতে পারে। এতে চুল মসৃণ ও ঝলমলে হয়। মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন বেটে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
৭। পেঁয়াজের রস
চুল পড়ার তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে পেঁয়াজের রস লাগাতে পারেন চুলে। এতে থাকা ফেনোলিক যৌগ এবং সালফার চুল পড়া কমাতে সক্ষম। কয়েকটি পেঁয়াজ পেস্ট করে রস বের করে নিন। চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে।
তথ্য: স্টাইল অ্যাট লাইফ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।