লাইফস্টাইল ডেস্ক : হীরা পৃথিবীর মূল্যবান পাথরগুলোর একটি, যা গয়না তৈরিতে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পুরোনো দিনের মতো এখনো ব্যক্তির জৌলুশ প্রকাশে বহুল ব্যবহৃত রত্ন এটি। নিঃসন্দেহে নিজ গুণেই এর দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তবে হীরা কিনতে গিয়ে টাকা দিয়ে নকল হীরা, যেমন কাচ কিংবা কিউবিক জিরকোনিয়া কেনা হচ্ছে কি না, তা যাচাই করতে যেতে হবে রত্নবিশেষজ্ঞ বা জেমোলজিস্টের কাছে। কিন্তু দোকানে তো যাচাই করার উপায় নেই। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতেই চেনা যায় হীরা আসল নাকি নকল। চলুন, জেনে নিই সে পদ্ধতিগুলো—
পানি দিয়ে পরীক্ষা
কোনো নেকলেস বা আংটি থেকে খুলে যাওয়া হীরা দিয়েই শুধু এই পরীক্ষা করা সম্ভব। একটি গ্লাসের ৪ ভাগের ৩ ভাগ পানি নিয়ে তাতে হীরাটি ছেড়ে দিতে হবে। যদি হীরাটি তলিয়ে যায়, তাহলে এটি আসল। কিন্তু যদি ভেসে থাকে কিংবা আংশিক ডুবে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এটি নকল। এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে হীরাটি ধাতব উপাদানের সঙ্গে যুক্ত থাকলে হবে না। কারণ, ধাতুর ভরে এটি এমনিতেই ডুবে যাবে।
সঙ্গে ব্যবহৃত ধাতু পর্যবেক্ষণ
হীরাটি যদি আংটিতে বা নেকলেসে বসানো থাকে, সে ক্ষেত্রে ধাতব অংশের নিচের দিকের লেখাগুলো খেয়াল করতে হবে। ধাতুতে খোদাই করে তার গুণগত মান লেখা থাকে। স্বর্ণ হলে ১০কে, ১৪কে, ১৮কে ও ২২কে এমন লেখা থাকে। ৫৮৫, ৭৭০, ৯০০—প্লাটিনামের ক্ষেত্রেও এমন সংখ্যা বসানো থাকে। স্থায়িত্ব আর সুরক্ষার জন্য হীরা বসানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উন্নত মানের ধাতু ব্যবহার করা হয়। তাই আসল হীরার গয়নায় সংযুক্ত ধাতুটির গায়ে লেখা দেখে সহজেই মান যাচাই করা যায়।
ফগ টেস্ট
এই পরীক্ষায় দুই আঙুলের মধ্যে হীরাটি রেখে বড় করে নিশ্বাস ছাড়তে হবে। নিশ্বাসের গরম বাতাস হীরার ভেতরে কুয়াশার মতো অবস্থা তৈরি করে। হীরাটি আসল হলে এই অবস্থা তৎক্ষণাৎ কেটে যাবে। যদি কিছু সেকেন্ড স্থায়ী হয়, তাহলে বুঝতে হবে এটি নকল। কারণ, হীরা যেহেতু তাপ সুপরিবাহী, তাই সহজেই নিশ্বাসের গরম তাপ পুরো অংশে ছড়িয়ে যায়।
ইউভি লাইট দিয়ে পরীক্ষা
হীরাকে ইউভি লাইটের নিচে রেখে এই পরীক্ষা করা যায়। অধিকাংশ হীরা থেকে নীল রঙের দ্যুতি ছড়ায়। তবে সব হীরার ক্ষেত্রে এটি সঠিক নয়। হীরাটি নীলাভ উজ্জ্বলতা ছড়ালে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায়। আর এটা না হলে অন্যান্য পরীক্ষা বা পেশাদার কারও সাহায্য নিতে হবে।
বিন্দু পরীক্ষা
সাদা কাগজে একটি ছোট বিন্দু এঁকে হীরার ওপরের সোজা অংশটি তার ওপর রাখতে হবে। এবার হীরার নিচের অংশের শেষ প্রান্ত দিয়ে দেখার চেষ্টা করতে হবে বিন্দুটি দেখা যায় কি না। আসল হীরা দিয়ে এ বিন্দুটি দেখা যাবে না। কারণ, আসল হীরা দিয়ে আলো প্রতিসরিত হয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায়।
প্রতিফলন ব্যবহার করে দ্যুতি পরীক্ষা
হীরার প্রতিফলন বলতে পাথর থেকে প্রতিফলিত আলোর পরিমাণ ও বিচ্ছুরিত আলোর গুণমান বোঝায়। সাদা আলো আর রঙিন আলো দুটিই থাকে হীরায়। তাই হীরা পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ল্যাম্পের নিচে রেখে ওপর থেকে দেখতে হবে প্রতিফলিত আলো কেমন। যদি সাদা ও রঙিন আলো উভয়ই দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে হীরাটি আসল। কাচ ও কিউবিক জিরকোনিয়ার মতো নকল হীরা থেকে তুলনামূলকভাবে নিস্তেজ প্রতিফলন হয়।
সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষা
এটি খুব সহজ একটি পদ্ধতি। হীরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্ত বস্তু। কোনো কিছু দিয়েই একে ঘষে মসৃণ করা যাবে না। হীরা কৃত্রিম হলে এতে সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষলে সহজেই দাগ পড়ে যাবে।
সূত্র: কেন অ্যান্ড ডানা ডিজাইন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।