বিনোদন ডেস্ক : অভিনয়ের পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নেমেছিলেন চিত্রনায়িকা ববি। সেখানে তাকে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে ‘ববস্টার ডাইনিং’ নামে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার জেরে সম্প্রতি ববির বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, চুরি, মারপিট ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে গুলশান থানায় আসামী করে মামলা হয়েছে।
তবে ববি জানালেন, এগুলো সবই ফেইক। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের একটি রেস্টুরেন্টে মামলার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ববি। তিনি বলেন, আমি একজন আর্টিস্ট। আমার ইমেজ ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে এসব করা হচ্ছে।
”যারা এগুলো করছে, ভেবেছে আমি আর্টিস্ট ইমেজ হারানোর ভয়ে চুপ থাকবো। কিন্তু না, অন্যায়কে প্রশয় দিতে নেই।”
”এক দশকের ফিল্ম ক্যারিয়ারে আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ কোনো নেতিবাচক অভিযোগ আনতে পারেনি। এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগে যা বলা হচ্ছে সেগুলো সিনেমার গল্পে হয়ে থাকে। আমি এসবে চুপ না থেকে আইনীভাবে ফেইস করছি। আমার নামে মিথ্যা মামলা হওয়ায় আসল সত্যিটা আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে সেগুলো দায়ের করে মামলা করেছি।”
ববি জানান, তিনি বিষয়টি মিটমাট করার জন্য আড়াই থেকে তিনমাস চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। পরবর্তীতে অ্যাটাক হওয়ার পর মুখ খোলা ছাড়া কোনো উপায় দেখেননি। এসব ঘটনায় মানসিক ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন উল্লেখ করে ববি বলেন, এসব হওয়ার পর অলমোস্ট ৭৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলাও হয়েছে।
বাংলা সিনেমার ‘বিজলি’ খ্যাত এ নায়িকা বলেন, রেন্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডিজাইন, স্টাফ সবকিছু করতে ৭৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ২২ জুন রাতের মধ্যে সবকিছু ভেঙে লণ্ডভণ্ড করে।
পরদিন ব্যবসায়িক পার্টনার মির্জা বাশার ও ববিকে আসামি করে রেস্টুরেন্ট ভবনের এ জি এম সাকিব মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে গুরুতর অভিযোগ আনেন ববি।
ববি জানান, গত এপ্রিল মাসে রেস্টুরেন্ট হস্তান্তর করা হয়। এপ্রিল থেকে রেস্টুরেন্টের ভাড়া প্রতি মাসে আড়াই লাখ ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ পরিশোধ করে আসছেন। ভবনের মালিক আমাদের নামে ভাড়া জমা নিয়ে রসিদও দেন।
ববি বলেন, ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আমরা ভবনের শাহিনা ইয়াসমিন ও তার সন্তান জাওয়াদ আল মামুনকে চুক্তিপত্র, ফায়ার সেফটি ও বাণিজ্যিক অনুমতির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেওয়ার অনুরোধ করি।
ববি অভিযোগ করেন, যখন ট্রেড লাইসেন্স করতে এসব কাগজপত্র চেয়েছেন তখন থেকে হঠাৎ করেই পূর্বের রেস্টুরেন্ট মালিক আমান, ভবন মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তার ছেলে জাওয়াদ, ভবনের দায়িত্বে থাকা জয়, সাকিবসহ অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আমাদের হয়রানি শুরু করেন।
শাহিনা ও জাওয়াদের নির্দেশে ভবনের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী জয়, সাকিব, হারুন ও তাদের সহযোগীরা বারবার আমার রেস্টুরেন্টের বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিয়ে আমাকে হয়রানি শুরু করেন। এর মধ্যে ওয়ান গ্রুপ থেকে বারবার সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে রেস্টুরেন্টে এসে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।
গুলশানের মতো জায়গায় এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে দেখে আমি ভীত হয়ে যাই এবং এরা আসলে কাদের লোক তা জানার চেষ্টা করি। তখনই আমরা প্রথম জানতে পারি, শাহিনা ইয়াসমিন সাবেক এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার স্ত্রী এবং এই ভবনের মালিক তিনিই।
এমন পরিস্থিতিতে বিপদের আশঙ্কা দেখে ট্রেড লাইসেন্সের বিষয়ে করণীয় কী সে পরামর্শ করতে আমরা সিটি করপোরেশনে যাই এবং জানতে পারি, ওই বিল্ডিংয়ের কোনোরকম বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অনুমতি নেই। এই ঘটনার পর আমরা বুঝতে পারি, আমান, শাহিনা ও জাওয়াদ মিলে আমাদের সঙ্গে এক ভয়াবহ প্রতারণা করেছেন।
তিনি বলেন, আমার পার্টনারকে ও ম্যানেজারকে নিয়মিত থ্রেড দিয়ে যাচ্ছে। শাহিনা ইয়াসমিন নামের ব্যক্তি আমাকে নারী হিসেবে আশ্বাস দিয়ে বিনিয়োগ করিয়েছেন। এখন উনি বলছেন যারা এসব করেছেন উনি চেনেন না।
ববি বিশ্বাস করেন, আসল সত্যিটা শিগগির বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, সবার সময় সবসময় অনুকূলে থাকে না। আমি কখনো এসব মামলায় জড়িয়ে কাউকে মিথ্যে কিছুটে ফাঁসিয়ে ভাইরাল হওয়ার মনোভাবে পোষণ করিনি। আজ পর্যন্ত যতটুকু লাইমলাইটে এসেছি আমার কাজ দিয়ে। আমার বিশ্বাস, এখন পর্যন্ত আমার সঙ্গে যা হয়েছে পুরোটাই অন্যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।