বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহরাজ বৃহস্পতি বা জুপিটার। সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতির ব্যাস ১, ৪২, ৮০০ কিলোমিটার।
আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১, ৩০০ গুন বড়। এটি সূর্য থেকে প্রায় ৭৭.৮ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম।
বৃহস্পতি গ্রহের আকারই সৌরজগতের বাকি গ্রহগুলো থেকে আলাদা করেছে। বৃহৎ আকারের জন্য মহাকাশবিজ্ঞানীদের কৌতূহলও কম সৃষ্টি হয়নি এই গ্রহকে নিয়ে। এর গতিপথ ,উপগ্রহ থেকে শুরু করে এর পৃষ্ঠতলে কি কি আছে ? কিভাবেই বা আছে এনিয়েও গবেষণা চলেছে বিস্তর। পৃথিবী থেকে এবার বৃহস্পতি গ্রহকে খুবই কাছাকাছি দেখা যাবে।
৭০ বছর পর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসতে চলেছে বৃহস্পতি। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর (সোমবার) এই বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন বিশ্ববাসী। এই দিন আরও বেশি উজ্জ্বল ও দৈত্যাকার দেখাবে বৃহস্পতিকে। এদিন পৃথিবীর বিপরীত স্থানে অবস্থান করবেন বৃহস্পতি ও সূর্য। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন গত ৭০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল।
পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব প্রায় ৫৯২.৬৯ মিলিয়ন কিলোমিটার। কিন্তু আগামী ২৬সে সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে সবচেয়ে কম, মাত্র ৩৬৫ মিলিয়ন কিলোমিটার । বৃহস্পতির এইরকম পৃথিবীর নিকটবর্তী হওয়ার ঘটনাটি মহাজাগতিক বলে জানিয়েছেন নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষণারত জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাডাম কোবেলস্কি। তিনি বলেছেন, “ভাল অর্থাৎ অত্যাধুনিক ব্যান্ডযুক্ত বাইনোকুলার ব্যবহার করলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকেই সেদিন দেখতে পাওয়া যাবে গালিলিয়ান ৩-৪ টি উপগ্রহ। ” এছাড়াও ৪ ইঞ্চি বড়ো এবং সবুজ নীল ফিল্টারযুক্ত টেলিস্কোপ ব্যবহার করলেও বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট এবং ব্যান্ডগুলিকে আরও বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে সেদিন।
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও বৃহস্পতির এই উপগ্রহগুলিকে পরীক্ষা করার জন্য একসময় আলোকবিজ্ঞানের সাহায্য নিয়েছিল। কিন্তু কোবেলস্কির মতে আমরা যদি সেদিন বৃহস্পতির উপগ্রহগুলি দেখতে চাই তাহলে সুরক্ষিত মাউন্ট যুক্ত টেলিস্কোপই ব্যবহার করতে হবে।
বৃহস্পতির ৭৯ টি চাঁদ আবিষ্কার করা গিয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ টি নামকরণও করা হয়েছে। উক্ত চাঁদগুলির সবচেয়ে বড় যে চারটি চাঁদ রয়েছে – আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো এগুলিকে গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ বলা হয়।
বিজ্ঞানীদের মতে, মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করার সেরা স্থান হল অন্ধকার এবং উঁচু শুষ্ক এলাকা। নাসার জুনো মহাকাশযান, যেটি ৬ বছর ধরে বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করছে সেটি এইসময় গ্রহের পৃষ্ঠ এবং চাঁদ অন্বেষণের জন্য নিবেদিত থাকবে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, বৃহস্পতি অধ্যয়ন সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে যুগান্তকারী আবিষ্কারের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।