জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার ঈশ্বরদীতে আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কাবাডি ফাইনাল খেলায় দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ইউএনওসহ ৮ জন আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা চত্বরে এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় শিশির নামের এক বহিরাগতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটককালে শিশিরের কাছ থেকে একটি টিপ চাকু জব্দ করে পুলিশ। শিশিরের বাড়ি ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া পিয়ারাপুর গ্রামে। তিনি সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।
আহতরা হলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস, সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র তৌফিক ইসলাম শুভ, লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম, রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সালমান সরদার, দর্শনার্থীদের মধ্যে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাঈম ইসলাম সহ আরও ৩-৪ জন। তাদের নাম জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গণে আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কাবাডি ফাইনাল খেলা চলছিল। ফাইনালে দাশুড়িয়ার রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অংশ নেয়। খেলার এক পর্যায়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম হামলার শিকার হন। এরপর লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে এসে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের সাথে বহিরাগতরা মিলে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ইউএনও’র কার্যালয়, পিআইও অফিস সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস আহত হন। এছাড়া সংঘর্ষে দুই স্কুলের আরো অন্তত ৭ জন আহত হয়। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম জানান, ‘চুড়ান্ত কাবাডি খেলার শেষ মুহুর্তে সাঁড়া ঝাউদিয়ার খেলোয়াড় তৌফিক কাবাডি খেলায় ‘দম’ নেওয়ায় রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াড়রা তৌফিককে ঝাপটে ধরলে দর্শক সারি থেকে চিল্লাচিল্লি ও মারামারি বেধে যায়। এরপর হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস বলেন, ‘অতীতে স্কুল মাঠে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতো। যে কারণে এবছর পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কিন্তু তারপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতরা যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেক পেতে হয়। পরে সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাত আটটা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।