আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জমজমাট অফিস-পার্টিতে কর্মীদের জন্য বোনাসের ঘোষণা করেছিলেন সংস্থার মালকিন সারা ব্লেকলি। বোনাসের বহর শুনে প্রথমটায় বিশ্বাসই হয়নি অনেকের। এমনও হয়? তার পর থেকেই অনেকেই বলাবলি শুরু করেছেন— সারাই দুনিয়ার সেরা বস্!
সারার ঘোষণা ছিল, বোনাস হিসাবে প্রত্যেক কর্মীকে প্রথম শ্রেণির দু’টি করে বিমানটিকিট দেওয়া হবে। সে টিকিটে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় ঘুরতে যেতে পারেন তাঁরা। সঙ্গে আবার নগদে ১০ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকা)।
সারার ঘোষণা শুনে খুশিতে উপচে পড়েছেন সকলেই। করতালি, উচ্ছ্বাসের ফাঁকে অনেকেরই আবার আনন্দাশ্রু বয়েছে। অনেকে তখনও ব্যস্ত গোটা দৃশ্য মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করতে।
গত বছরের অক্টোবরের এই বিপুল পরিমাণ বোনাসের কথা ঘোষণা করেছিলেন সারা। তবে সে দিনের সেই ভিডিওটি আবারও নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সে দিনের ভিডিও, নয় নয় করে ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছেন। উৎসাহের আতিশয্যে এক জন তো টুইটও করেছেন, ‘নিজের টিমের জন্য স্পেশাল কিছু করেছেন। সারা একেবারে কিংবদন্তি!’
এই বিপুল বোনাস দিতে অনেকটাই পথ পেরোতে হয়েছে সারাকে। আজ তাঁর সংস্থায় ৫০০ জনের বেশি কর্মী রয়েছেন। তবে ২১ বছর আগে মাত্র লাখ চারেক টাকায় নিজের সংস্থা শুরু করেছিলেন তিনি।
২০২১ সালে এসে সারার সংস্থাটি ১২০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা) অর্থমূল্যের সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
সারার সংস্থা ‘স্প্যান্ক্স’ মূলত অন্তর্বাস তৈরি করে। গত বছর সে সংস্থায় বড়সড় বিনিয়োগ আসতেই তা ফুলেফেঁপে ওঠে। ১২০ কোটি ডলারের সংস্থা হওয়ার খুশিতে অফিসের সমস্ত কর্মীকে নিয়ে একটি রেস্তরাঁয় পার্টি দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই বলেছিলেন বোনাসের কথা।
পার্টিতে নিজের ছোট্ট মেয়েকে পাশে নিয়ে কর্মীদের উদ্দেশে সারার ঘোষণা ছিল, ‘‘এই বিশেষ মুহূর্তে আপনাদের সকলের জন্য দুটো করে প্রথম শ্রেণির বিমানটিকিট এনেছি। তাতে বিশ্বের যেখানে খুশি যাওয়া যাবে।’’
সারার ঘোষণা মাত্রই করতালিতে ভেসে গিয়েছিল গোটা রেস্তরাঁ। তবে অবাক হওয়ার তখনও বাকি ছিল। এর পর এল বোনাসের পরের অংশ— ‘‘আপনারা কোনও সফরে যেতে পারেন। দারুণ কোনও রেস্তরাঁয় খেতে পারেন, ভাল হোটেলে গিয়ে থাকতে পারেন। এই সবের জন্য প্রত্যেকে ১০ হাজার ডলার করে পাচ্ছেন।’’
সারার কাছে এই বোনাস দেওয়াটা নিছক ঘোষণা ছিল না। খানিকটা আবেগতাড়িত হয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেকের কাছে এ এক বিশেষ মুহূর্ত। বিশ্বের যে সব মহিলারা এই সুযোগ পাননি, তাঁদের কথাও স্মরণ করতে চাই।’’
নিজে পেশাদার জগতে প্রবেশ করলেও সারার মা-ঠাকুরমাদের কাছে অর্থ উপার্জনের সুযোগ বা সুবিধা, কোনওটাই ছিল না। সে দিন সে কথাও বলেছিলেন সারা। সারার কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে আমার মা, ঠাকুরমার কথা মনে পড়ছে। যাঁদের কাছে (সংসার ছাড়া) কোনও বিকল্প পথ ছিল না।’’
নিজের হাতে গড়া সংস্থা আড়েবহরে বেড়ে ওঠায় আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন সারা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘অত্যন্ত আবেগে ভেসে এই (বোনাসের) ঘোষণা করছি। কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আনন্দাশ্রু নিয়েই এ ঘোষণা। আমরা অনেক পথ পেরিয়ে এসেছি।’’
সারার আগে অনেকেই কর্মীদের বিপুল পরিমাণ বোনাস দিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছেন। সম্প্রতি ম্যাট ফ্লেচার নামে ব্রিটেনের এক ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার মালিকও সংসারখরচের জন্য তাঁর কর্মীদের হাজার পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ টাকা) করে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে সারার মতো বিপুল পরিমাণ বোনাস সম্ভবত কেউ দেননি!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।