জুমবাংলা ডেস্ক : কখনো জমাকৃত টাকার দ্বিগুন লাভের প্রলোভন কখনো নতুন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপুর্ণ পদ দেওয়া আবার কখনো নানা প্রলোভনে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তানজিনা আক্তার সোমা নামের একজন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার মিরপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার তাকে করে। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় তানজিনা আক্তার সোমার। এক পর্যায়ে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে নানা প্রলোভনে ১০ লাখ টাকা ধার নেন সোমা। এই টাকা পরিমোধ না করে আবারো ১৫ লাখ টাকা নেন। কিন্তু তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই আরো ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন সোমা।
এদিকে স্বামীর জমানো টাকা দিয়ে চরম বিপাকে পড়া বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। তাকে চেকও দেন সোমা। কাউকে কিছু না বলে টাকা তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে এক পর্যায়ে বিষয়টি বিল্লাল হোসেন জেনে যাওয়ায় তাদের পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়। পরে বিল্লাল হোসেন সোমার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২১ মে মামলা দায়ের করেন। তিনটি চেক ডিজঅনার হলে আদালত ২০১৫ সালে ১০ লাখ টাকার দ্বিগুন ২০ লাখ, ১৫ লাখ টাকার ৩০ ও ১৬ লাখ টাকা প্রতারণার ঘটনায় ৩২ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
অনাদায়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু সুচতুর সোমা এরমধ্যে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রে নামিনাল ফিহা রাখেন নিজের নাম। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাও বদলে ফেলা হয়। পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক দলও গঠন করেন সোমা। নাম দেন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ঐক্য’। এই ব্যানার ব্যবহার করে অনেক লোকের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন সোমা।
অন্যদিকে বিল্লাল তার টাকা পাওয়ার জন্য থানা পুলিশসগ বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেও কোনো সুরাহা পান নি। এরমধ্যে সোমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু প্রতারক সোমা একেক সময় একেক মোবাইল ফোন ব্যবহার ও বাসা বদল করায় তাকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশ পিছু হটেনি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত শুক্রবার মিরপুর এলাকা থেকে সোমাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
থানায় নেওয়ার পর ডিএমপির মিরপুর জোনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মিরপুর মডেল থানার ওসির সামনে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা স্বীকার করেন। একইভাবে তাকে আদালতে নিলেও আদালতেও স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন সোমা।
বিল্লাল হোসেন জানান, শুধু তিনিই নন। অনেক লোক তার কাছে টাকা পাবেন। তারা একাধিক মামলাও করেছেন। সকলেই প্রথমাবস্থায় যোগায়োগের চেষ্টা করলে ঠিকানা বদল হওয়ায় সোমার অবস্থান জানতে ব্যর্থ হন। তবে মিরপুর থানা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর অনেকেই ছুটে যান থানায়।
মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপরেশন) মাহবুব সরকার জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে খোঁজার পর গত শুক্রবার মিরপুর এলাকা থেকে সোমাকে গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারো পাঠানো হয়। বিল্লাল ছাড়া আরো বেশকয়েজন ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।