জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা নগরে বসবাস করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই দ্রুত নগরায়ণের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নগরায়ণের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১) অনুসারে, ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবে।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর প্ল্যানার্স টাওয়ারে ‘নগর দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে করণীয় : প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউটব অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বিআইপির পক্ষ থেকে আটটি পরামর্শ দেয়া হয়। বিআইপির আটটি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রণয়ন করা ভূমিকম্প কন্টিনজেন্সি প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা (অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো যথাযথ চিহ্নিতকরণ ও এসংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা); দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি, ২০১৯-এ বর্ণিত যেসব সংস্থার কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরির কথা উল্লেখ রয়েছে তা অতি দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করে জলাধারগুলো চিহ্নিত করে বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া; বিল্ডিং কোড প্রয়োগ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা; পর্যায়ক্রমে সব ধরনের পেশাজীবী নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা; ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম কার্যকর করা; কাঠামো নকশা, যন্ত্রকৌশল নকশা, বৈদ্যুতিক নকশা ও প্লাম্বিং নকশা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জানান, বিবিএস-২০১১ মোতাবেক, নগরে বসবাসরত জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ ঢাকায় বসবাস করছে, যা বর্তমানে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ড্যাপ অনুযায়ী, ঢাকার জনঘনত্ব ৩০০ থেকে ৮০০/একর, যা নগরটিকে করে তুলেছে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। রাজধানীর ৭৩ শতাংশ ভবন অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। তবে ড্যাপের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আরও কঠোর হতে হবে। দেশের পুকুর, পার্ক, জলাধার ও উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ করতে হবে।
গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, শহরকে সঠিক উপায়ে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে রাজউক। ছয় ফুট রাস্তা থাকলেই ভবন করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে ভবন মালিককে ২০ ফুট রাস্তার জমি সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিয়ে ভবন তৈরির অনুমোদন নিতে হবে। রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত ৭৩ শতাংশ ভবন যাচাইয়ে তৃতীয়পক্ষকে দায়িত্ব দেয়া হবে। নতুন নির্মিত ভবন রাজউক নিয়মিত মনিটর করবে।
বিআইপির সভাপতি শেখ ফজলে রেজা সুমনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ ছালেহ উদ্দিন, জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ মারি মিউরা, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল প্রমুখ বক্তব্য দেন। বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী হাসান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।