জুমবাংলা ডেস্ক : দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবারও মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে দেশের দরিদ্রতম জেলা কুড়িগ্রামে এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাবেন ২১ হাজার ৪২০ সদ্য সন্তান জন্ম দেয়া ও অন্তঃসত্ত্বা মা। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই প্রতি মাসে নিজস্ব বিকাশ বা নগদে টাকা পাবেন তালিকাভুক্তরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে ৩৬ মাস সহায়তা পাবেন এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীরা। চলমান এ কর্মসূচিতে জেলার ৯ উপজেলায় প্রতি মাসে ১৭৮৫ অন্তঃসত্ত্বা নারী এ সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে সুবিধা ভোগীদের দুই সন্তান ও বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। এর আগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জেলায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ১২২ জন।
সরেজমিনে সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার চম্পা বেগম আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নদীভাঙনের শিকার তার পরিবার। স্বামী দিনমজুরের কাজ করে বাবা-মাসহ ৫ জনের সংসার চালান। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে একজনের সামান্য রোজগারে যখন সংসার চালাতেই হিমশিম অবস্থা; তখন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য ভালোমন্দ খাবার ব্যবস্থা করাটা দুঃস্বপ্নের মতোই। এই পরিস্থিতিতে গর্ভে সন্তান নিয়ে চম্পা বেগম তাকিয়ে আছেন সরকারি সহায়তার দিকে। দ্রুত সহায়তা পেলে হয়তো ভালো কিছু খেতে পারতেন। তাতে উপকার হতো নিজের এবং পেটের সন্তানের।
অন্তঃত্ত্বা চম্পা বেগম জানান, আমরা নিজেরাই তিনবেলা ভালোভাবে খেতে পারি না। যদি এ সহায়তা পাই তাহলে ভালো কিছু খেতে পারব। এতে আমার এবং পেটের সন্তানের উপকার হবে।
শুধু চম্পা বেগম নয়, একই অবস্থা ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার প্রায় ৪ শতাধিক চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত অন্যান্য অন্তঃসত্ত্বা ও সদ্য সন্তান জন্ম দেয়া নারীদেরও। এক মাস আগে আবেদন করে সরকারি এ সহায়তা পাওয়ার আশায় দিন গুনছেন তারা।
সদরের ভিতরবন্দ ইউনিয়নের আরেক অন্তঃসত্ত্বা সাবিনা বেগম জানান, তার স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। এতে ঠিকমতো সংসার চালাতে পারছেন না। গর্ভাবস্থায় যদি প্রতি মাসে কিছু টাকা পান, তা দিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় অনেক কিছু কিনতে পারবেন এবং ভালোমন্দ খেতে পারবেন। কিন্তু একমাস আগে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কাগজপত্র জমা দিলেও এখনও কোনো টাকা পাননি।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, তার ইউনিয়ন থেকে ২১ অন্তঃসত্ত্বা ও সদ্য সন্তান জন্ম দেয়া মায়ের নাম দেয়া হয়েছে। প্রতি মাসে ২১ জনের নাম চাওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি। দ্রুত সহায়তা প্রদান করা হলে দরিদ্র এসব মায়েদের অনেক উপকার হবে। দরিদ্রপীড়িত এ জেলায় সরকারি এ উদ্যোগ অসহায় মা ও শিশুদের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক জেবুন্নেছা জানান, নানা প্রতিকূলতার কারণে দরিদ্র মা ও শিশুর সরকারি এ সহায়তা পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে পরবর্তী মাস থেকে নিয়মিত সহায়তা পাবেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।