আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর আলোকপাত করেছে চারটি সংস্থা। ভেরিটে, শোভা কনসালট্যান্টস, বোমসা এবং ওয়ারবে-ডিএফ, তাদের পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে৷
‘ফোস্টারিং ফি অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যান্ড কস্ট ট্র্যাকিং (এফএফএসিটি)’ শিরোনামের গবেষণায় এমন ফল উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর অর্পিত আর্থিক বোঝা এবং কর্মস্থলে শোষণকে তুলে ধরেছে।
সমীক্ষা অনুসারে, মালয়েশিয়াগামী অভিবাসী শ্রমিকদের ৯৬ শতাংশ নিয়োগের ফি পরিশোধ করার জন্য কমপক্ষে একটি ঋণ নিয়েছে, যা পাসপোর্ট, ভিসা, মেডিকেল চেকআপ এবং মালয়েশিয়ায় গমনের খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অধিকন্তু, ৮২ শতাংশ কর্মীকে দুই বা ততোধিক ঋণ করতে হয়েছে, ৭৩ শতাংশ কর্মী মাসিক বেতনের ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ সেই ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যয় করে।
মজুরি প্রতারণা ছিল গবেষণায় চিহ্নিত আরেকটি প্রচলিত সমস্যা, ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতারা প্রতিশ্রুত বেতনের চেয়ে কম বেতন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। জরিপকৃতদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ কর্মী ঋণ পরিশোধের জন্য বেশ উদ্বেগজনক অবস্থায় থাকে বলে জানিয়েছে।
১০ মে ফোকাস মালয়েশিয়া এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পরিচালিত এই সমীক্ষায় ৩৫৭টি সাক্ষাৎকার বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং মালয়েশিয়ায় ২৪০ জন অভিবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের গড়ে প্রায় পাঁচ লাখ ৪৪ হাজার টাকা দিতে হয়েছে, যা একজন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থানে এক বছরের মজুরির সমান।
শেভা কনসালট্যান্টস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সামারা খান অভিবাসী শ্রমিকদের ঋণ পরিশোধের চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছেন, যা প্রায়ই অনানুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া কোনো রেকর্ড নেই। এই কারণে কোনো নির্ভরযোগ্য ডেটা উত্স নেই। তবে আমাদের সংস্থা প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছে। শ্রমিকদের ঋণ পরিশোধের জন্য কমপক্ষে এক বছরের মজুরি প্রয়োজন। মালয়েশিয়ার কোম্পানি এবং ব্র্যান্ডগুলো (উৎপাদিত পণ্যের) নতুন মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স আইনের তদন্তের আওতায় আসে এবং সঠিক, ন্যায্য এবং স্বচ্ছ নিয়োগের জন্য একটি বর্ধিত চাহিদা রয়েছে।
এদিকে বিওএমএসএর সাধারণ সম্পাদক শেখ রুমানা তৃতীয় পক্ষের (মধ্যস্বত্বভোগী) লেনদেন এবং অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের সাথে যুক্ত ঝুঁকি সম্পর্কে কর্মীদের সচেতন করার জন্য দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারণার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।
ডব্লিউএআরবিইর উপপরিচালক শুহরাওয়ার্দী হুসেনের মতে, অভিবাসী শ্রমিকদের সাপ্লাই চেইন অবশ্যই নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে হবে। সরকার যদি আবার মালয়েশিয়ায় সরকারী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়, তাহলে সমুদ্রপথে মানবপাচারের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।