বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের দাবি, চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) ইসরায়েল ও তার মিত্রদের অর্থায়নে পরিচালিত হওয়ায় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়বে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত রামাদান বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এএইউডব্লিউ-র তহবিলের বড় উৎস ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। তিনি জানান, এজন্যই ফিলিস্তিন দূতাবাস কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছিল। রাষ্ট্রদূতের ভাষ্যে, অতীতে এইউডব্লিউ-তে একজন আফগান ও একজন লাও শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি, যা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর চেরি ব্লেয়ারের স্বামী টনি ব্লেয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ‘গাজার রিভেরা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত, যার উদ্দেশ্য গাজা উপত্যকার জাতিগত নির্মূল। তার দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিরাও রয়েছেন এবং ফিলিস্তিনকে শিক্ষার্থী পাঠাতে কিছু শক্তিধর দেশ চাপ প্রয়োগ করেছিল। রামাদান স্পষ্ট করে বলেন, ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা এইউডব্লিউ নয়, বরং বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহী—’আমাদের মেয়েরা বিক্রির জন্য নয়, তারা আমাদের সম্মান, আর আমরা সেই সম্মান রক্ষা করব।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অস্বীকার করে জানায়, এএইউডব্লিউ ২০০৬ সালের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন অ্যাক্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিচালিত হয়, যেখানে আচার্যের জাতীয়তা বা তহবিল উৎসে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাদের পরিচালনা পর্ষদ চেরি ব্লেয়ারকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে তার সুনাম এবং নারী শিক্ষায় অবদানের কারণে আচার্য নির্বাচিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এএইউডব্লিউ কখনো কোনো ইসরায়েলি সংস্থা থেকে তহবিল নেয়নি কিংবা কোনো অংশীদারিত্বে জড়ায়নি। ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের গাজা থেকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানের সহযোগিতায় কাজ করা হয়েছে, যা ছিল সম্পূর্ণ মানবিক উদ্যোগ। এই মিশনের প্রতি ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর প্রকাশ্যে সমর্থন জানান এবং বাংলাদেশি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য তারা কোনো বহিরাগত অর্থায়ন পায়নি, বরং নিজেদের তহবিল থেকে ডরমিটরি, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, রাষ্ট্রদূতের বিরোধিতা সত্ত্বেও গাজার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই উদ্ধারের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।