বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, কেউ কেউ ধর্মের কথা বলেন, কিন্তু কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকে না। এটা আমাকে কষ্ট দেয়। আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন- জনগণের মধ্যে আপনার অবস্থান কী, কখনও কি জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা রেখেছিল? বিএনপি সেই দল, যারা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পালায়নি, আত্মসমর্পণ করেনি; অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে এবং দেশকে স্বাধীন করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি সেই দল, যারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাকশালের কবরের উপর বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বিএনপি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দল নয়। তাই বিএনপির সমালোচনা করবেন, তবে সেটা হোক বাস্তবসম্মত, বিভ্রান্তিকর নয়।
আজ শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ১৫ আগস্ট দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন ছিল। তার সুস্থতার জন্য যারা দোয়া, রোজা, সাদকা, ওমরাহ ও তাওয়াফ করেছেন তাদের প্রতি আমরা দলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, আমরা ইলিয়াস আলী, দিনার, জুনেদসহ হাজার হাজার ভাইকে হারিয়েছি।
অনেকেই গুম হয়েছেন, অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। তাদের পুনর্বাসনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজকাল অনেকেই এমন ভাষায় কথা বলেন, যা গণতন্ত্রের ভাষা নয়; বরং কর্তৃত্ববাদী শাসকের ভাষা। কিন্তু বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করে।
ছাত্র-যুবসমাজের ভবিষ্যৎ, দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, কৃষি, স্বাস্থ্য, বিচারব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।
জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। আমরা চাই, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে ছিলাম, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি।
আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ আসবে, ইনশাআল্লাহ আমরা তা অর্জন করব। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা তাতে আস্থা রাখতে চাই।
তাই বিভেদ নয়, কাদা ছোড়াছুড়ি নয়, জনগণের মনের ভাষা বুঝুন, জনগণের কাছে যান। আমরাও ৩১ দফা নিয়ে গিয়েছি, আপনারাও যান। জনগণ যাকে ভালোবাসবে, তাকেই গ্রহণ করবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় সম্মেলন প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. ফয়জুল করিম ময়ূন, সদস্য নাসের উদ্দিন মিঠু, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাফিজ, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।