গত এক বছরে নানা আর্থিক সংস্কার ও তারল্য সহায়তায় দেশের ব্যাংক খাত কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য উন্নত হয়েছে, গ্রস রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, এবং রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
তবে বড় অঙ্কের আমানত ফেরত পাওয়া এখনো অনেক গ্রাহকের জন্য দুঃস্বপ্ন। কিছু দুর্বল ব্যাংক মাসে মাত্র ৫ হাজার টাকা দেওয়ার সক্ষমতাও হারিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতে এস আলম গ্রুপের অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব ছিল। বর্তমান সরকার সেই দখলদারিত্ব থেকে ব্যাংক খাতকে মুক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ব্যাংক খাতের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
আইএমএফ-এর ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের শর্ত অনুযায়ী ব্যাংক ঋণনীতি, সুদহার ও খেলাপি সংক্রান্ত নীতিমালায় বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে ব্যবসায়ীরা চাপের মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকার ১৪টি দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত, ৫টি ব্যাংক একীভূত এবং খেলাপি ঋণ ও জালিয়াতি দমনে একাধিক টাস্কফোর্স গঠন করেছে। ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্টের আওতায় আরও ১০টি ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া চলমান।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাস আয় ৩,০৩২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। জুলাই মাসেই এসেছে ২৪৭ কোটি ডলার। এই প্রবাহে রিজার্ভ বেড়ে ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
দুর্নীতিবাজদের অর্থ ফেরাতে ২০০টির বেশি দেশে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ হয়েছে। বেশ কয়েকটি পরিবার, বিশেষ করে সাইফুজ্জামান জাভেদ ও সালমান এফ রহমান সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
২০টি দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান উচ্চ খেলাপি, মূলধন ঘাটতি ও গ্রাহকের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সংকটে।
৪৬টি নন-লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠানের দাবির মাত্র ৯ শতাংশ পরিশোধ করেছে। দাবির ৯০ শতাংশই অনিষ্পন্ন, যা বীমা খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার অন্যতম কারণ।
ঋণ প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ১০.১৩% থেকে নেমে ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ৬.৪০%-এ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান সরকার এখনো আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।