যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটক-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, টিকটক তরুণ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে আসক্তিকর অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে এবং প্রতারণামূলক ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
মিনেসোটার অভিযোগ
স্টেট আদালতে দায়ের করা মামলায় টিকটককে প্রতারণা ও ভোক্তা প্রতারণা-বিরোধী আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। মিনেসোটার অ্যাটর্নি জেনারেল কিথ এলিসন বলেছেন, এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয় নয় বরং প্রতারণা, ভুল উপস্থাপন এবং এক ধরনের কৌশল। তিনি দাবি করেন, টিকটক তাদের পণ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলেও কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
আগের মামলার ধারাবাহিকতা
এই মামলাটি গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের এক ডজনেরও বেশি অঙ্গরাজ্যে দায়ের করা মামলার ধারাবাহিকতা। সেখানে অভিযোগ ছিল, টিকটক শিশুদের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে আসক্তিমূলক করে তৈরি করা হয়েছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। বর্তমানে প্রায় ২৪টি অঙ্গরাজ্য টিকটকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা
রোজভিল এরিয়া স্কুল ডিস্ট্রিক্টের এক মিডল স্কুলের স্বাস্থ্য শিক্ষক শন প্যাডেন জানিয়েছেন, টিকটকের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিষণ্নতা, উদ্বেগ, রাগ, আত্মসম্মান বোধ কমে যাওয়া এবং মনোযোগের ঘাটতি।
টিকটকের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, টিকটক মিনেসোটার আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কোম্পানির মুখপাত্র নাথানিয়েল ব্রাউন বলেছেন, এই মামলা বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, কিশোরদের নিরাপত্তার জন্য টিকটকে ৫০টিরও বেশি নিরাপত্তা ফিচার ও সেটিং রয়েছে। এছাড়া ফ্যামিলি পেয়ারিং টুলের মাধ্যমে অভিভাবকরা স্ক্রিন টাইম ও কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
আদালতের দাবি
মিনেসোটা রাজ্য আদালতের কাছে দাবি করেছে, টিকটকের কার্যক্রম প্রতারণামূলক ঘোষণা করা হোক এবং এসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক। পাশাপাশি, মিনেসোটায় টিকটক ব্যবহারকারী প্রতিটি শিশুর জন্য ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। এলিসন বলেন, তারা টিকটক বন্ধ করতে চান না, বরং চায় কোম্পানি যেন নিজেদের আচরণ ঠিক করে।
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মামলা যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের বিরুদ্ধে চলমান আইনি লড়াইকে আরও জোরদার করেছে। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি, আসক্তি এবং নিরাপত্তা উদ্বেগকে কেন্দ্র করে টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। শেষ পর্যন্ত, টিকটক আইন মেনে চলবে কি না তা আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
জেনে রাখুন-
প্রশ্ন ১: মিনেসোটা কেন টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে?
মিনেসোটা অভিযোগ করেছে যে টিকটক আসক্তিকর অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে এবং তরুণ ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। এছাড়া কোম্পানি প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
প্রশ্ন ২: টিকটক কীভাবে অভিযোগের জবাব দিয়েছে?
টিকটক অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, কিশোর ব্যবহারকারীদের জন্য ৫০টিরও বেশি নিরাপত্তা ফিচার রয়েছে এবং ফ্যামিলি পেয়ারিং টুলের মাধ্যমে অভিভাবকরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
প্রশ্ন ৩: টিকটকের বিরুদ্ধে কতগুলো অঙ্গরাজ্যে মামলা হয়েছে?
এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪টি অঙ্গরাজ্য টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এসব মামলায় সাধারণ অভিযোগ হলো শিশুদের আসক্তি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি।
প্রশ্ন ৪: মিনেসোটা আদালতে কী দাবি করেছে?
মিনেসোটা আদালতের কাছে দাবি করেছে টিকটকের কার্যক্রম প্রতারণামূলক ঘোষণা করা, স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা এবং শিশুপ্রতি ২৫ হাজার ডলার জরিমানা আদায় করা।
প্রশ্ন ৫: শিক্ষকদের পর্যবেক্ষণ কী ছিল?
শিক্ষকদের মতে, টিকটক ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষণ্নতা, উদ্বেগ, রাগ এবং মনোযোগের ঘাটতি বেড়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।