আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নামিব মরুভূমি থেকে পাঁচ শতাব্দী আগে হারিয়ে যাওয়া একটি পর্তুগিজ জাহাজের সন্ধান মিলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানান, ১৫৩৩ সালে লিসবন বন্দর থেকে ভারতে যাওয়ার পথে ঝড়ে ডুবে যাওয়া জাহাজ ‘বম জেসুস’ (দ্য গুড জিসাস) ভরা ছিল স্বর্ণমুদ্রা ও তামার গুপ্তধনে। ২০০৮ সালে নামিবিয়ার উপকূলবর্তী হীরার খননকালে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গবেষকদের ধারণা, তীব্র ঝড়ে উপক‚ লের খুব কাছাকাছি চলে আসায় জাহাজটির তলদেশ পাথরে আঘাত হানে এবং উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সময়ের সঙ্গে সাগরের পানি সরে গিয়ে জাহাজটি মরুভ‚মির বালুর নিচে চাপা পড়ে থাকে।
প্রততাত্তিক দলটি জানায়, জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রায় দুই হাজার খাঁটি স্বর্ণমুদ্রা, দশ হাজার পাউন্ডের বেশি তামার ¯ø্যাব, বিভিন্ন তামার পাত্র, কামান, মুসকেট, তরবারি, দিকনির্দেশক কম্পাস, নক্ষত্র নির্ণয়ের যন্ত্রসহ প্রায় পাঁচশ’ বছরের পুরনো বহু সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চ–এর প্রধান প্রতœতাত্তি¡ক ড. নোলি বলেন, “নামিব উপক‚ল ঝড়ের জন্য কুখ্যাত। তাই জাহাজডুবি অস্বাভাবিক নয়, তবে এত সোনাভরা গুপ্তধন মেলা সত্যিই বিরল ঘটনা।”
ইতিহাসবিদদের মতে, লিসবন থেকে যাত্রা করা জাহাজটি পশ্চিম ভারতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সে সময় দীর্ঘ নৌপথের জন্য পর্তুগিজরা বড় ও শক্তিশালী জাহাজ ব্যবহার করত, যা বাণিজ্য ও সামুদ্রিক অভিযানে সহায়ক ছিল।
বর্তমানে ‘বম জেসুস’–কে আফ্রিকার পশ্চিম উপক‚লে আবিষ্কৃত সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে মূল্যবান জাহাজডুবি হিসেবে ধরা হচ্ছে। এটি উদ্ধার হয়েছিল স্পেরগেবিট (ঝঢ়বৎৎমবনরবঃ) অঞ্চলে, যাকে একসময় ‘নিষিদ্ধ এলাকা’ বলা হতো। বর্তমানে নামিবিয়া সরকার ও হীরা কোম্পানি ডি-বিয়ার্স যৌথভাবে অঞ্চলটি পরিচালনা করছে।
খনি এলাকার নিরাপত্তার কারণে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। সীমিতসংখ্যক মানুষকেই সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। আবিষ্কৃত গুপ্তধন ও নিদর্শন নিয়ে একটি জাদুঘর স্থাপনের প্রস্তাব থাকলেও তা বাস্তবায়িত হবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।
সূত্র: গ্রিক রিপোর্টার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।