বাংলাদেশে সঞ্চয়ের নিরাপদ মাধ্যম এবং ভাগ্য পরীক্ষার অন্যতম জনপ্রিয় উপায় হলো প্রাইজবন্ড। এটি সরকার পরিচালিত একটি বিনিয়োগ প্রকল্প, যেখানে গ্রাহক যেকোনো সময় বন্ড কিনতে বা ভাঙাতে পারেন। সরাসরি কোনো সুদ না থাকলেও বছরে চারবার আয়োজিত লটারির মাধ্যমে বিজয়ীরা পেয়ে থাকেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।
বাংলাদেশ সরকার জনগণের কাছ থেকে ঋণ সংগ্রহের একটি মাধ্যম হিসেবে প্রাইজবন্ড চালু করেছে। এখানে বিনিয়োগের টাকায় কোনো সুদ পাওয়া যায় না, বরং নির্দিষ্ট সময়ে আয়োজিত লটারিতে অংশগ্রহণের সুযোগ মেলে। সাধারণত ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই এবং ৩১ অক্টোবর তারিখে ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
কেন প্রাইজবন্ড কিনবেন?
.একবার কেনা হলে প্রাইজবন্ড একাধিকবার লটারিতে অংশ নিতে পারে।
.এটি যেকোনো সময় ভাঙানো যায়।
.সরাসরি নগদ অর্থের পরিবর্তে সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদি) এটি অর্থবহ উপহার হিসেবে দেওয়া যায়।
.সুদভিত্তিক নয় বলে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেকে এটিকে গ্রহণযোগ্য মনে করেন।
প্রাইজবন্ডে বিভিন্ন স্তরের পুরস্কার নির্ধারিত রয়েছে: প্রথম পুরস্কার: ৬ লাখ টাকা (প্রতিটি সিরিজে একজন), দ্বিতীয় পুরস্কার: ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা (প্রতিটি সিরিজে একজন),তৃতীয় পুরস্কার: ১ লাখ টাকা (প্রতিটি সিরিজে ২ জন), চতুর্থ পুরস্কার: ৫০ হাজার টাকা (প্রতিটি সিরিজে ২ জন),পঞ্চম পুরস্কার: ১০ হাজার টাকা (প্রতিটি সিরিজে ৪০ জন) প্রতি ড্র তে মোট ৩,৭৭২ জন বিজয়ী নির্বাচিত হন।
কোথায় পাওয়া যায়
.বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখায় (ময়মনসিংহ বাদে)
.দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে (শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ব্যতীত)
.জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সঞ্চয় ব্যুরো অফিস
.ডাকঘর
সুবিধা
. নিরাপদ বিনিয়োগ, মূলধন ফেরত পাওয়া যায়।
. সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে উপযোগী।
. বছরে চারবার পুরস্কার জয়ের সুযোগ।
. সুদভিত্তিক নয়, তাই ঝুঁকিমুক্ত সঞ্চয় হিসেবে বিবেচিত।
অসুবিধা
. পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা খুবই কম, পুরোপুরি ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল।
. লভ্যাংশের হার কম (৬.৫%), ব্যাংক ডিপোজিট বা সঞ্চয়পত্রের তুলনায় কম লাভজনক।
. পুরস্কারের অর্থে ২০% আয়কর কেটে নেওয়া হয়।
. নকল প্রাইজবন্ড শনাক্ত কঠিন হওয়ায় প্রতারণার ঝুঁকি থাকে।
. পুরস্কার তুলতে জটিল প্রক্রিয়া পোহাতে হয়।
. মুদ্রাস্ফীতির কারণে ১০০ টাকার প্রাইজবন্ডের প্রকৃত মূল্য আগের মতো নেই।
ফলাফল জানার উপায়: প্রাইজবন্ড ড্র–এর ফলাফল জানা যায় জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পোর্টাল থেকে: https://prizebond.ird.gov.bd/
উল্লেখ্য, প্রাইজবন্ড হলো বিনিয়োগের পাশাপাশি ভাগ্য পরীক্ষার এক আকর্ষণীয় মাধ্যম। এটি নিরাপদ, সহজে কেনা-বেচা যায় এবং বছরে চারবার পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ থাকে। তবে পুরস্কার জেতার অনিশ্চয়তা, স্বল্প লভ্যাংশ এবং কর কর্তনের বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখা জরুরি। সঠিক পরিকল্পনায় এটি হতে পারে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের একটি কার্যকর উপায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।