ঘুষের বিনিময়ে একদিনেই ৭৭ জন কর্মচারীকে বদলির অভিযোগে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে দুদক সূত্র।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দুদক সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন অফিসে অভিযান চালিয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
দুদকের নথি অনুসারে, বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আনা ১৩টি অভিযোগের মধ্যে তিনটির সত্যতা মিলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ—একই দিনে ৭৭ জন কর্মচারীর বদলি।
নথিতে বলা হয়েছে, বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি নীতিমালা ২০০৪ লঙ্ঘন করে ফরেস্ট গার্ড, ফরেস্টার, নৌকাচালক ও ডেসপাস রাইডার পদমর্যাদার ৭৭ জনকে একদিনেই বদলি করেন রেজাউল করিম। এসব বদলি ঘুষের বিনিময়ে করা হয়েছে বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এছাড়া, অর্থের বিনিময়ে অনেকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বদলি করা হয়েছে এবং মেয়াদ শেষ হলেও কিছু কর্মচারীকে ইচ্ছাকৃতভাবে বহাল রাখা হয়েছে।
দুদকের নথি সূত্রে আরও জানা যায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০টি বিভাগীয় অফিসের আওতাধীন প্রতিটি রেঞ্জ থেকে মাসিক ১ লাখ টাকা, প্রতিটি চেক স্টেশন থেকে ১ লাখ টাকা এবং বনবিট থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়মিত চাঁদা আদায়েরও প্রমাণ মিলেছে।
রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম ফরেস্ট একাডেমির ফরেস্টার আব্দুল হামিদের মাধ্যমে এই অর্থ লেনদেনের বেশিরভাগ সম্পন্ন হয় বলে দুদকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, ফেনীর একটি বাগান প্রকল্পে ১ লাখ গাছ রোপণের নামে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণও পেয়েছে দুদক।
সংস্থাটির হাতে থাকা প্রাথমিক তথ্যমতে, রেজাউল করিমের নামে ঢাকার লালমাটিয়ায় প্রায় ৭ কোটি টাকার দুটি ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে তার স্ত্রীর নামে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট এবং সাতক্ষীরার তালা থানায় ২০ একর জমি কেনার তথ্যও মিলেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতেই তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।