জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, “এই অভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছে সাধারণ মানুষ—শ্রমিকেরা ও তাদের সন্তানরা। মাঝখান দিয়ে ফায়দা লুটছে তথাকথিত কিছু রাজনীতিবিদ।”
শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের চৌরাস্তা বাজারে অনুষ্ঠিত লংমার্চের পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, প্রতিটি জেলা–উপজেলায় পাঁচ থেকে দশজন চাঁদাবাজ, চোরাকারবারি, সিন্ডিকেট চালনাকারী, মাদক ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। “প্রতিটি জেলা–উপজেলায় এই কারণেই আমি নেমেছি—আপনাদের নতুন করে সচেতন হতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
সারজিস আলম পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরিণতির উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “নবাব সিরাজউদ্দৌলের বাহিনীতে ৫০ হাজার সৈন্য ছিল, লাখ লাখ মানুষ সমর্থনে ছিল, কিন্তু মাত্র দুই-তিন হাজার ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে পরাজিত হতে হয়েছিল। যদি সাধারণ মানুষ সক্রিয় হতো, ২০০ বছরের জন্য বাংলার স্বাধীনতা হারাত না। আজও একই অবস্থা—দশ-পাঁচজন রক্ত চুষছে আর মানুষ নীরব দর্শকের মতো ভয়ে ঘরে বসে আছে।”
এ পথসভায় সারজিস আলম সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য সামনে আসে।
তেঁতুলিয়ায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের কড়া সমালোচনা করে সারজিস আলম বলেন, ‘যেদিন আপনার ঘরের নিচে ওই ড্রেজিং মেশিন দিয়ে তোলা পাথরগুলো সরে যাবে, আপনার ঘর দেবে যাবে, পাঁচ বছরেও আপনার ঘর ঠিক করতে পারবেন না, বৃষ্টির দিনে আপনার ঘরে পানি পড়বে, সেদিন আপনার নেতা আপনার ঘরের দিকে তাকাবে না। একটা জিনিস মনে রাখবেন, সোনার হাঁস থেকে প্রতিদিন একটা ডিম আসুক সমস্যা নাই, সনাতন পদ্ধতিতে বালু-পাথর তোলেন সমস্যা নাই। কিন্তু একদিনে যদি সব ডিম পাইতে চান, ড্রেজিং মেশিন যদি বসাইতে দেন, দশটা লোককে প্রতিদিন রাতে ১০ লাখ টাকা তাদের পকেটে ঢুকাইতে দেন, কয়েক দিন পরে আপনার ঘর আর ঘর থাকবে না, সব দেবে যাবে, আপনার ফসলি জমিতে আর ফসল হবে না। আপনারা নিজেরা সচেতন না হলে কেউ আপনাদেরকে সচেতন করবে না।’
এনসিপির পঞ্চগড় জেলার আয়োজনে শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলার ঐতিহাসিক চিনিকল মাঠ থেকে বাংলাবান্ধার উদ্দেশে শুরু হওয়া এই লংমার্চের নেতৃত্ব দেন সারজিস আলম। এতে এনসিপির পাঁচ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারীরা ছাড়াও এনসিপি ও জাতীয় যুবশক্তির নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।