আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে ইসলাম একটি প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা দুই বিলিয়নের বেশি। এটি খ্রিস্টধর্মের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম এবং মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার বড় একটি অংশে এর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবং ভারতের মতো দেশগুলোতে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। তবে এমন কিছু দেশ রয়েছে যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় শূন্য, এবং কিছু ক্ষেত্রে ইসলাম কার্যত নিষিদ্ধ।
উত্তর কোরিয়া এমনই একটি দেশ। এটি প্রায়শই তার শাসক কিম জং-উনের কারণে খবরের শিরোনামে আসে। দেশটি আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোকে প্রধান শত্রু হিসেবে দেখে। মাত্র ২.৬ কোটি জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়াকে একটি শক্তিশালী সামরিক ক্ষমতার দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
উত্তর কোরিয়া: একটি নাস্তিক রাষ্ট্র
নিউজ১৮ হিন্দির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া নিজেকে একটি নাস্তিক দেশ হিসেবে দাবি করে। এখানে নাগরিকরা ধর্ম চর্চার স্বাধীনতা পেলেও সেই স্বাধীনতা তখনই কার্যকর থাকে, যদি তা দেশের সামাজিক শৃঙ্খলা বা শাসনব্যবস্থাকে ব্যাহত না করে। অধিকাংশ মানুষ কোরিয়ান শামানিজম এবং চংরিয়নবাদে (Chongryonism) বিশ্বাসী। কিম জং-উনের সরকার এই আদর্শগুলোকে ব্যাপকভাবে প্রচার করে।
কোরিয়ান শামানিজম হাজার বছর ধরে চর্চিত একটি প্রাচীন ধর্মীয় ঐতিহ্য। অন্যদিকে, চংরিয়নবাদ একটি মতাদর্শ যা জাপানে বসবাসকারী উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সংগঠন চংরিয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
উত্তর কোরিয়ায় ইসলামসহ যে কোনো বিদেশি ধর্ম পালনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যদিও দেশটি নিজেকে নাস্তিক ও কমিউনিস্ট বলে দাবি করে, বাস্তবে এটি একটি একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। কোনো ধর্ম যদি দেশের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, তবে তা নিষিদ্ধ।
উত্তর কোরিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ায় বর্তমানে প্রায় ৩,০০০ মুসলমান বাস করেন। তবে তাদের জন্য কোনো মসজিদ নেই। একমাত্র মসজিদটি রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস কমপ্লেক্সের মধ্যে, যা শুধুমাত্র ইরানি নাগরিকদের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকলেও এটি অত্যন্ত সীমিত। কেউ যদি শাসকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বা আদেশ অমান্য করে, তাকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে। সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা কার্যত নেই।
এ কারণেই উত্তর কোরিয়াকে এমন একটি দেশ বলা হয় যেখানে ইসলাম ধর্মের প্রচার বা মুসলমানদের উপস্থিতি কার্যত নিষিদ্ধ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।