জুমবাংলা ডেস্ক : স্বপ্ন নিয়ে মিথ আছে। অনেকে স্বপ্নে বড় বড় রোগের ওষুধ আবিষ্কার করার দাবি করেন। তারপর গাছের শিকড়-বাকড় দিয়ে, ঝাড়ফুঁক ধোঁকাবাজির মাধ্যমে মানুষের কুচিকিৎসা করেন। মানুষ সরল বিশ্বাসে তাদের দ্বারস্থ হন এবং টাকা-পয়সা খোয়ান।
কেউ কেউ আবার আরেককাঠি সরেস, স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে ভবিষ্যৎ গণনার দাবি করেন। এগুলোও ধোঁকাবাজি।
স্বপ্ন মস্তিষ্কের জঞ্জাল সাফ করার একটা প্রক্রিয়া। সাম্প্রতিক জীবনের নানা কর্মকাণ্ড, সচেতন ও অবচেতন মনের অনেক ভাবনার প্রতিফলন ঘটে।
তাই বলে যে স্বপ্ন কোনো কাজে লাগে না, তা নয়। স্বপ্নেই হয়তো অনেক সমস্যার সমাধান লুকিয়ে থাকে। তার মানে এই নয়, স্বপ্ন সমাধানটা আপনাকে দিয়ে গেছে।
আসলে সমস্যাটা নিয়ে হয়তো আপনি দীর্ঘদিন ভাবছিলেন, অবচেতন মন হয়তো সেটার সমাধানও করে ফেলেছে, কিন্তু সচেতন মন তখনো সমাধানটা বুঝতে পারেনি, তাই হয়তো আপনার মনে হয়েছে, সমস্যাটা যে তিমিরের, সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।
তারপর হঠাৎ একদিন স্বপ্নে সমস্যার সমাধান পেয়ে গেলেন।এমনটা কিন্তু হতেই পারে। বিখ্যাত এক আবিষ্কার হয়েছিল এভাবেই।
১৮৬৫ সাল। জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক কেকুল বেনজিন যৌগের গঠন কেমন হবে, সেটা বের করার চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু অনেক ভেবেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছিলেন না। একদিন একটা স্বপ্ন দেখলেন। অনেকগুলো পরমাণু নাচতে নাচতে একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটা লম্বা শিকলে পরিণত হলো। কেকুল ভালো করে খেয়াল করলেন। শিকলটা পরিণত হলো সাপে। পরক্ষণে সেই সাপটা নিজেই নিজের লেজটা গিলতে শুরু করল। তখন সাপটার যে চেহারা হয়েছিল, সেটা দেখেই কেকুল বুঝতে পেরেছিলেন বেনজিনের আণবিক গঠন কেমন হবে। আজ আমরা বেনজিনের যে ষড়ভুজাকৃতির গঠন দেখি, সেটা কেকুলের স্বপ্ন দেখা সাপটার জ্যামিতিক রূপ।
এই বেনজিন রসায়ন ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনেক বড় ভূমিকা রাখছে।দুনিয়াব্যাপী সবচেয়ে পরিচিত ওষুধ প্যারাসিটামল প্রধান উপদান এই বেনজিন।এছাড়া প্ল্যাস্টিক ও রঞ্জক পদার্থ তৈরিতেও বেনজিন তৈরি হয়। আধুনিক যুগের অন্যতম গ্ররুত্বপূর্ণ বেনজিনের গঠন আবিষ্কার করতে ছিল স্বপ্নের ভূমিকা। তবে মনে রাখবেন, বেনজিন রাসায়নিক গঠন স্বপ্নে আবিষ্কার করেছিলেন কেকুল, বেনজিন নামের যৌগটিকে নয়।
এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা জরুরি, কেকুল যদি বেনজিনের দীর্ঘদিন গবেষণা না করতেন, তাহলে হুট করে স্বপ্নে আবিষ্কার করা সম্ভব হত না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।