জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. আশ্রাফ আলী চৌধুরী সারুর দেওয়া এক বক্তব্যে তোলপাড় চলছে জেলাব্যাপী। তার দেওয়া বক্তব্যটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এমন বক্তব্য দেওয়া প্রসঙ্গে ড. সারু বলেন, আমি যা বলেছি সবই সত্য। আমার বক্তব্যেই আমার উত্তর রয়েছে।
বর্তমান এমপির সমালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব খুচরা এমপি আমি পকেটে রাখি। এমপি সাহেব ২০১৪ সাল থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত রামগতি-কমলনগরকে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তিনি বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করছেন; যার প্রমাণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।
সোমবার সকালে আলেকজান্ডার বাজারের দলীয় অফিসে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় বক্তব্য রাখেন দলটির রামগতি উপজেলা সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ড. আশ্রাফ আলী চৌধুরী সারু। তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনে এম মেজবাহ উদ্দিনকে মেয়র বিজয়ী করতে এক হাজার মানুষকে তাঁবু টানিয়ে দুই দিন ভাত খাইয়েছি। প্রায় ১৩ লাখ টাকা খরচ করেছি। এরপর সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে তাকে চাপ দেওয়া হলেও তিনি তা নাকচ করে দেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি, ডিসি, ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন লোককে লাখ লাখ টাকা সহায়তা করেন এবং উপঢৌকন দেন। করোনাকালীন প্রশাসনকে উপকরণ সহায়তাসহ নগদ টাকা দিয়েছেন।
স্থানীয় এমপি আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্বাচনকালীন বিপুল পরিমাণের টাকা ব্যয় করার কথা উল্লেখ করে সারু বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। আমি নির্বাচনের সময় তার জন্য ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছি। এখন তিনি বিএনপি-জামায়াতকে রামগতিতে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছেন।
উপজেলা নির্বাচনে এমপি মামুন বিএনপি নেতা শরাফ উদ্দীন আজাদ সোহেলের পক্ষে অবলম্বন করার তীব্র সমালোচনা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, এমপি সাহেব আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেননি। তিনি এখন বিএনপি নেতাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত রামগতি-কমলনগরকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছেন।
২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এমপি সাহেবের পক্ষে নির্বাচন করার কথা উল্লেখ করে ড. সারু বলেন, এমপি আব্দুল্লাহ অতীতের মতো আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশ্রয় দেবে না এবং জামায়াত বিএনপিকে লালন পালন করবে না বলে ওয়াদা করায় আমি তার নির্বাচন করেছি। কিন্তু এখন তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি আবারো সেই আগের মতোই কাজ করছেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনে ড. সারু ভোট করেছেন রোকেয়া আজাদের আনারস প্রতীকের। সেখানেও তিনি বিপুল পরিমাণের টাকা (৭ লাখ) খরচ করেছেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেলের কঠোর সমালোচনা করেন। এসব বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম নিজাম, সহ-সভাপতি একরামুল কবির টিটু, সদস্য ও পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সদস্য সাহেদ আলী মনুসহ অনেকে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন এই প্রতিবেদককে বলেন, আশ্রাফ আলী সারু সংসদ নির্বাচনে আমার পক্ষে ২২ দিন প্রচারণা করেছেন; বিনিময়ে আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি উগ্র মেজাজের মানুষ। কথায় কথায় তিনি অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এমনকি গবাদিপশু ছাগলকে পর্যন্ত অস্ত্র দেখান তিনি। তার সম্পর্কে আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।