জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগসহ ১১ রাজনৈতিক দলকে রাজনীতির বাইরে রাখতে চেয়ে করা রিট চালাবেন না সারজিস আলম ও আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ)। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বিচারপতি ফাতেমা নজীবের কোর্টে এসে বলেন তারা রিটটি আর চালাতে চাননা। পরে হাইকোর্ট তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন।
রিটটি প্রত্যাহার কারণ জানতে চাইলে আদালত প্রাঙ্গণে রিটকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেখুন যখন কোনো মামলা আসে আইনজীবীর কাছে, তখন সেই মামলার নির্দেশনা তারাই দিয়ে থাকেন। বক্তব্য থাকে যারা পিটিশন করেন তাদের। আবার তারা যদি সেটি তুলে নিতে চান, তখন তাদের কথাতেই তোলা হয়। তবে রিটকারী বা মামলাকারী কখনও বলেন না কী কারণে তিনি মামলা তুলে নিচ্ছেন। সুতরাং এটি আমি বলতে পারব না, কী কারণে রিটটি তোলা হলো। তবে দেশের সার্বিক গণতন্ত্রের জন্য ও দেশের মঙ্গলের জন্য তারা এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে আমরা ধারনা। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সমন্বয়করা।
রিটে যে ১১টি দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চাওয়া হয় সে তালিকায় আওয়ামী লীগের ১৪ দলের শরিক রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কাস পার্টিসহ আরও তিন দলকে যেমন বাদ দেয়া হয়, কার্যক্রম নিষিদ্ধের তালিকায় রাখা হয় আওয়ামী লীগ বিরোধী ভূমিকায় থাকা এলডিপি ও কমিউনিস্ট পার্টিকেও। বিষয়টিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে মন্তব্য করেছেন আহসানুল করিম। তিনি বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে তালিকায় অনেকের নাম চলে এসেছে আবার বাদও পরে গেছে অনেকে।
একই সঙ্গে বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (দশম, একাদশ ও দ্বাদশ) বৈধতা নিয়ে করা রিটটিও না চালানোর কথা জানান আহসানুল করিম। তিনি বলেন, ঢালাওভাবে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নে করা রিট নিয়েও প্রশ্ন উঠে। কেন না এ তিনটি নির্বাচনের এমপিরা ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ চাওয়া হয়। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে ২০১৪ ও ২০২৪ জাতীয় নির্বাচন বয়কট করে বিএনপিসহ অধিকাংশ দল। ১৮ নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপিসহ নিবন্ধিত প্রায় সব দলই। এ সংসদে বিএনপির ৭ জন এমপিও হন। যদি তিনটি নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে রুল এবং যারা এসব নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন. ভবিষ্যতে তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না এরকম আদেশ আসত, তখন ১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের কী হতো? এমন বাস্তবতায় রিট দুটি প্রত্যাহার না হলে দেশের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিত বলে মনে করেন এ আইনজীবী।
এর আগে গতকাল (২৮ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন। সেই সঙ্গে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণার আবেদনও জানিয়েছিলেন তারা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া আরও দলগুলো হলো- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।