গোপালগঞ্জের ব্যাপারটি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রথম কথা হলো—প্রত্যেকটি জীবনই মূল্যবান। যে কোনো কারণেই হোক, কোনও জীবনের হানি আমরা কামনা করি না, আশা করি না।
আওয়ামী লীগের কর্মীদের মেজর সাদিক নামে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন—এমন একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেজর সাদিককে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সেনা সদর দফতরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘মেজর সাদিকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যদিও বিষয়টি তদন্তাধীন, তারপরও আমি বলব—এরকম একটি ঘটনার কথা জানার পর সেনাবাহিনী হেফাজতে নিয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হলে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়মে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, এর বেশি এই মুহূর্তে বলা সমীচীন হবে না।’
এ সময় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ, জেএসএস—এই ধরনের দলগুলো সবসময় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। এটি নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ হয়। অবশ্যই সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে সেনাবাহিনী একাই পার্বত্য চট্টগ্রামের স্টেকহোল্ডার নয়—বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সবাই এর অংশ। সবাই যদি সমন্বিতভাবে কাজ করে, আমি নিশ্চিত এটিকে আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব এবং তা অবশ্যই প্রয়োজন।’
কেএনএফ অস্ত্র নিচ্ছে আরাকান আর্মির কাছ থেকে, তারা আধিপত্য বিস্তার করছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মি এখন এমন একটা অবস্থানে রয়েছে, তাদের সঙ্গে কেএনএফ-এর যোগসূত্র সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তারা মোটামুটি একই গোত্রের মানুষ এবং একই ধরনের মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। সেক্ষেত্রে কেএনএফ যদি আরাকান আর্মির কাছ থেকে অস্ত্র পেয়েও থাকে, তাতে আমি অবাক হব না। তবে আশার কথা হচ্ছে, কেএনএফ কোনও অবস্থাতেই আধিপত্য বিস্তার করতে পারছে না।’
গোপালগঞ্জের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘গোপালগঞ্জের ব্যাপারটি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রথম কথা হলো—প্রত্যেকটি জীবনই মূল্যবান। যে কোনো কারণেই হোক, কোনও জীবনের হানি আমরা কামনা করি না, আশা করি না। গোপালগঞ্জে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা দুঃখজনক। তবে এটি কোন প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলপ্রয়োগ করতে হয়েছিল, সে ব্যাপারে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন মাননীয় বিচারপতিকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করবে কীভাবে, কেন, কোন প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা সে পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোনো দল বা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নয়, বরং যাদের জীবন হুমকির মধ্যে পড়েছিল—আমরা তাদের বিবেচনায় রেখেই উদ্ধার করেছি। ইতিপূর্বেও আমরা একই কাজ করেছি। সেটা কোনও দলের পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়, বরং জীবন রক্ষার প্রয়োজনে করা হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।