জুমবাংলা ডেস্ক : বারোমাসি আঠাবিহীন কাঁঠালের দেখা মিলেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারে। মাত্র আড়াই বছরে এ জাতের কাঁঠাল গাছে ফল ধরে। এই কাঁঠাল অত্যধিক পুষ্টিকর ও সুস্বাদু।
এ জাতের কাঁঠালের নাম – ‘খাজা’। এ কাঁঠাল আঠাবিহীন হওয়ায় চাষে জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিনই মানুষ এই কাঁঠাল দেখতে ও স্বাদ গ্রহণ করতে হর্টিকালচারে ভিড় করছেন। তারা এই কাঁঠালের গুণাগুণ ও চারা সংগ্রহের জন্য খোঁজখবর নিচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে কাশিয়ানির হর্টিকালচার সেন্টারে ভিয়েতনাম থেকে ১০টি বারোমাসি ও আঠাবিহীন জাতের খাজা কাঁঠালের চারা এনে রোপণ করা হয়। এরমধ্যে তিনটি চারা ছাড়া সবগুলো মারা যায়। ২০২১ সালে ওই তিনটি গাছে ফল ধরতে শুরু করে।
এবছরও ওই তিনটি গাছে অর্ধশতাধিক কাঁঠাল ধরেছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। সরবরাহ করা হচ্ছে চারা। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ জাতের কাঁঠাল বারোমাসি ও আঠাবিহীন হওয়ায় ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে আশপাশের এলাকার ফল চাষিদের মাঝে। এখন বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের কাঁঠাল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।
হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ এ এইচ এম রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, ফল চাষিদের মাঝে এ কাঁঠালের চারা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কিছু কলম তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশই বাঁচেনি। আর যেগুলো বেঁচেছিল সেগুলো শৌখিন ফলচাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য এ জাতের কাঁঠালের আরো বেশি বেশি কলম ও বীজ থেকে চারা তৈরি করা হবে। তবে কলম থেকে তৈরি চারা গাছে ফল ধরতে একটু বেশি সময় লাগবে। কিন্তু কাঁঠালের গুণগত মান একই থাকবে।
হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই জাতের কাঁঠাল আমাদের দেশে একেবারে নতুন। এর সবচেয়ে বেশি সুবিধা হলো বীজ ও কলম করে চারা উৎপাদন করা যায়। আর অসময়ে পাওয়া যায় বলে এই কাঁঠালের চাহিদাও বেশি। তাই ভালো দাম পাওয়ায় যায়। এই কাঁঠালের পুষ্টিগুণ বেশি। আর কাঁঠাল খেলে পেটফোলা বা বদহজম হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই।
তিনি আরও বলেন, এটা রপ্তানিযোগ্য। আমাদের দেশ থেকে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টন কাঁঠাল বিদেশে রপ্তানি হয়। যেহেতু এই কাঁঠাল অসময়ে পাওয়া যায় তাই রপ্তানি করতে পারলে দাম বেশি পাওয়া যাবে এবং কৃষকের জন্য লাভজনক হবে। যদি কোনো উদ্যোক্তা এই কাঁঠাল চাষে এগিয়ে আসেন, তাহলে সহযোগিতা করব।
গোপালগঞ্জ শহরের সজীব বিশ্বাস বলেন, এ বছর আমি গোপালগঞ্জ হর্টিকালচার থেকে এই আঠাবিহীন কাঁঠাল খেয়েছি। এটা খাওয়ার সময় কচকচ শব্দ করলেও খেতে অনেক সুস্বাদু। আর খাওয়ার সময় হাতে বা মুখে কোনো আঠা লাগে না। আগামীতে এই কাঁঠালের চারা সংগ্রহ করে বাড়িতে লাগানোর ইচ্ছে আছে আমার।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সিংঙ্গাগ্রামের প্রসূন মন্ডল বলেন, আমি এই কাঁঠাল খেয়েছি। খাওয়ার সময় আমারে হাতে কোনো আঠা লাগেনি। এটা খাজা জাতীয় কাঁঠাল। মিষ্টি কিছুটা কম হলেও খেতে বেশ মজা।
গোপালগঞ্জ শহরের মোজাম্মেল হোসেন বলেন, গত বছর গোপালগঞ্জ হর্টিকালচারে এই কাঁঠাল খাওয়ার পর আমার ভালো লাগে। তখন আমি দুটি চারা এনে আমার বাড়িতে রোপণ করেছিলাম। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে চারা দুটি মারা গেছে। আবারও চারা সংগ্রহ করে যত্নসহকারে বাড়িতে রোপণের ইচ্ছা আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।