জুমবাংলা ডেস্ক : কুমিল্লার দাউদকান্দিসহ বিভিন্ন উপজেলার অলস জমিতে প্রতি মৌসুমে হাজার কোটি টাকার মাছ উৎপাদন হয়। এখানে ধানের জমিতে বছরের সাত মাস রুপালি মাছ খলবলিয়ে ওঠে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ও ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন। এ এলাকাগুলোর অধিকাংশ জমি নিচু হওয়ায় বছরে একটি ফসল হয়। পাঁচ মাস ফসলের পর বাকি সাত মাস অলস পড়ে থাকে। ১৯৮৬ সালের দিকে ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ধানুয়াখলা গ্রামের আদর্শ মৎস্য প্রকল্প নাম দিয়ে সুনীল কুমার রায়সহ অন্যরা এগিয়ে আসেন। তারা পানিতে ডুবে থাকা জমিগুলোকে কাজে লাগান। ৩০০ বিঘা জমিতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন তারা। তাদের চেষ্টায় আসে নজরকাড়া সাফল্য। মাছ চাষের লাভের অংশ জমির মালিকরা ভাগ করে নেন। এরপর আশপাশের গ্রাম থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে উপজেলা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বর্তমানে কুমিল্লার দাউদকান্দির সঙ্গে চান্দিনা, মুরাদনগর ও তিতাসের ২ শতাধিক গ্রামের ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে মাছের চাষ হচ্ছে।
এ ছাড়া জেলার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রামের নিচু এলাকায় এ পদ্ধতির চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। মৌসুমে বিক্রি হচ্ছে হাজার কোটি টাকার মাছ। দাউদকান্দির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-সংলগ্ন ইলিয়টগঞ্জ, আদমপুর, পুটিয়া, রায়পুর, সিংগুলা, লক্ষ্মীপুর, সুহিলপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গড়ে উঠেছে এসব মৎস্য প্রকল্প। দাউদকান্দির ১১৫টি মৎস্য প্রকল্পসহ পাশের উপজেলায় উৎপাদিত হচ্ছে রুই, মৃগেল, কাতলা, সিলভার কাপ, সরপুঁটি, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন জাতের রঙিন মাছ। এতে এলাকার বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ মাছ উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত লাখো মানুষ। সারা দেশে মাছ চাষে কুমিল্লা দ্বিতীয়। কুমিল্লার মধ্যে মাছ চাষে প্রথম দাউদকান্দি উপজেলা।
সকালের শীতের মধ্যেই জাল টেনে মাছ ধরায় ব্যস্ত উদ্যোক্তা ও শ্রমিকরা। ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম প্রকল্প কার্যালয় এলাকা। মাছে সকালের মিষ্টি আলো পড়ে চকচক করছে। লাফালাফি করছে তাজা মাছ। চলছে হাঁকডাক। পাইকারদের মাছ মেপে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নগদ টাকায় মাছ বিক্রি করে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানযোগে মাছ চলে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা সদরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
আদমপুর গ্রামের শ্রমিক মনিরুজ্জামান ও সিঙ্গুলা গ্রামের আলী আকবর বলেন, আমরা ধান চাষের পর সাত মাস বেকার থাকতাম। মাছ চাষ শুরু হওয়ায় আমরা কাজ পেয়েছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।