বিনোদন ডেস্ক : ভারতীয় ওয়েব সিরিজপ্রেমীদের জন্য ‘আশ্রম’ নামটি এখন একেবারে পরিচিত। মেধাবী চিত্রনাট্য, ভয়ের আবহ, ধর্মের নামে প্রতারণার কাহিনি—এই সিরিজটি শুরু থেকেই দর্শকদের মন জয় করে এসেছে। এখন সেই রহস্যে মোড়ানো গল্প আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। ‘আশ্রম’ সিজন ৪ নিয়ে এসেছে এমন কিছু ভয়াবহ সত্য যা দেখে আপনার হাড় হিম হয়ে যেতে পারে।
Table of Contents
‘আশ্রম’ ও তার ধর্মের মুখোশে লুকানো বাস্তবতা
‘আশ্রম’ সিরিজটির মূল উপজীব্য হলো একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ঘটে চলা নানা অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড। বাবা নিরালা—এই চরিত্রটির মাধ্যমে সমাজের অন্ধ বিশ্বাস, ধর্মীয় ভণ্ডামি, নারী নির্যাতন, ও রাজনৈতিক দুর্নীতির বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। সিজন ৪-এ সিরিজের গল্প আরও গভীর ও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে।
এই সিজনে দেখা যায়, বাবার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম আরও জটিল হয়েছে, তার অনুসারীরা বিভ্রান্ত, এবং তার অপরাধের খোলস ক্রমশ খুলে পড়ছে। অভিনেতা ববি দেওলের অসাধারণ অভিনয়, আশ্চর্যজনক কাস্টিং এবং প্রতিটি দৃশ্যের নিখুঁত পরিকল্পনা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
‘আশ্রম’ সিজন ৪: একটি ভয়াবহ সত্যের উন্মোচন
চতুর্থ সিজনে গল্পে যোগ হয়েছে নতুন চরিত্র ও নতুন মোড়। সিরিজের লেখক ও পরিচালক প্রচণ্ড সাহসিকতার সঙ্গে এমন অনেক বিষয়কে স্পর্শ করেছেন যা আগে খুব কম ওয়েব সিরিজেই দেখা গেছে। নারী পাচার, মাদক চক্র, এবং রাজনৈতিক সুবিধাবাদ—এইসব কাহিনি ধর্মীয় গালচোপে আড়াল হয়ে থাকে, যা ‘আশ্রম’ অনাবৃত করে দিচ্ছে।
সিজন ৪-এর প্রতিটি পর্ব এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে এক মুহূর্তও চোখ সরিয়ে রাখা যায় না। বিশেষ করে পর্ব ৭ ও ৮-এ এমন কিছু টুইস্ট আছে যা দর্শকদের হতবাক করে দিতে বাধ্য। বাবার কৃতকর্মের ফল কীভাবে সমাজকে ভেঙে দিচ্ছে, সেটাই মূল বার্তা।
‘আশ্রম’ সিরিজে ববি দেওলের চরিত্র ও অনবদ্য অভিনয়
ববি দেওলের ক্যারিয়ারে আশ্রম এক নতুন বাঁক এনেছে। বাবা নিরালার চরিত্রে তার অভিনয় এতটাই জীবন্ত যে দর্শকরা ঘৃণা ও মুগ্ধতা—দুটোই একসঙ্গে অনুভব করেন। চরিত্রটি যেমন ক্ষমতাবান, তেমনি ভয়ঙ্কর, ধূর্ত ও প্রতারক। ববি দেওলের চোখের ভাষা, সংলাপ বলার ভঙ্গি এবং শরীরী ভাষা চরিত্রটিকে ভয়াবহতা ও বাস্তবতার এক অসাধারণ মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
এই চরিত্রটির মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান ধর্মীয় অপরাধ, নেতিবাচক সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক অশুভ চক্রের মুখোশ খুলে যায়। প্রতিটি দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগে—এ কি শুধুই গল্প, না কি বাস্তবতাও এর কাছাকাছি?
‘আশ্রম’ সিরিজের নির্মাণশৈলী ও ক্যামেরার কাজ
সিনেমাটোগ্রাফির অসাধারণতা
সিরিজটির সিনেমাটোগ্রাফি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। প্রতিটি ফ্রেম পরিকল্পিত, রঙের ব্যবহার বাস্তবকে আরও উদ্ভাসিত করে তোলে। ক্যামেরার লেন্সে ক্যাম্পাস, আশ্রম, আদালত ও অন্ধকার জগৎ—সবকিছু এমনভাবে ধরা হয়েছে যেন দর্শক বাস্তব অভিজ্ঞতা পান।
পটভূমির সংগীত ও আবহ
সংগীত পরিচালনার ক্ষেত্রেও সিরিজটি নিখুঁত। পটভূমির আবহ সংগীত গা ছমছমে করে তোলে, যা সিরিজের ভয়াবহতার অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষত সিজন ৪-এ ব্যবহৃত সংগীত অধিক রহস্যময় এবং থ্রিল বাড়িয়ে দেয়।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ভয় আর রোমান্সে ভরপুর এই ওয়েব সিরিজ!
‘আশ্রম’ সিরিজের সামাজিক প্রভাব ও বার্তা
এই সিরিজটি শুধু বিনোদন নয়, বরং সমাজের অনেক অন্ধকার দিককে জনসমক্ষে তুলে ধরেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি অন্ধ বিশ্বাস, রাজনীতির ছত্রছায়ায় অপরাধ, এবং নারীর উপর নিপীড়ন—সব কিছু ‘আশ্রম’ একসঙ্গে আলোচনা করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ওয়েব সিরিজ সমাজে সচেতনতা আনতে পারে। ধর্ম ও রাজনীতির নামে যেসব অনাচার ঘটে, তার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে এই সিরিজ অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি একাধিক উচ্চপর্যায়ের অপরাধের বিচার ও জনসমর্থন এই বিষয়গুলো আলোচনায় এনেছে, যা ‘আশ্রম’-এর থিমের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

FAQs: ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন
‘আশ্রম’ সিরিজের মূল বার্তা কী?
‘আশ্রম’ সিরিজটি ধর্মীয় ভণ্ডামি, রাজনীতির কূটচাল এবং নারীর উপর নির্যাতনের মতো বিষয় তুলে ধরে। মূল বার্তা হলো—অন্ধ বিশ্বাস কখনোই সত্য ও ন্যায়ের বিকল্প হতে পারে না।
‘আশ্রম’ সিজন ৪ কীভাবে আলাদা?
এই সিজনটি গল্প, চরিত্র ও নির্মাণশৈলীর দিক থেকে আগের সিজনগুলোর চেয়ে অনেক বেশি উন্নত ও গা ছমছমে। এতে অপরাধ ও ভণ্ডামির আরো গভীর চিত্র দেখানো হয়েছে।
ববি দেওলের চরিত্র কেমন ছিল?
ববি দেওল বাবার চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। তার চরিত্রটি ক্ষমতাবান ও প্রতারকের প্রতিচ্ছবি—যা দর্শকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
এই সিরিজ কাদের জন্য উপযোগী?
যারা থ্রিলার, সামাজিক বাস্তবতা এবং সাহসী চিত্রনাট্য পছন্দ করেন, তাদের জন্য ‘আশ্রম’ উপযুক্ত। তবে এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযোগী কনটেন্ট।
‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজ কোন প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে?
এই ওয়েব সিরিজটি MX Player-এ উপলব্ধ, যা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।