সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী ও শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মিশনে ইসরায়েলকে গোপন তথ্য দিয়ে সহযোগিতার অভিযোগে একের পর এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে ইরান। এবার জানা গেল, নিজেদের শীর্ষস্থানীয় এক পরমাণু বিজ্ঞানীকেই ফাঁসিতে ঝোলাল দেশটি। রুজবেহ ভাদি নামে ওই পরমাণু বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে তার সহকর্মীদের গোপন তথ্য ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের কাছে সরবরাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়েও একইভাবে ইসরায়েলকে সহায়তা করে যাচ্ছিলেন তিনি।
বুধবার (৬ আগস্ট) ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে রুজবেহ ভাদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে ইরানের বিচার বিভাগ। পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল খোঁজ নিয়ে জেনেছে যে রুজবেহ ভাদি পরমাণুবিজ্ঞানী এবং ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার অধীনে পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সদস্য।
ভাদির গুগল স্কলার প্রোফাইল অনুসারে, রিঅ্যাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী তিনি। ২০১১ সালে ইরানের সিনিয়র পারমাণবিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একটি গবেষণাপত্রের সহ-লেখক ছিলেন তিনি। ইসরায়েলের সঙ্গে জুনে সংঘাতের সময় তার সাবেক সেই সহকর্মীরা নিহত হন।
আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির ডক্টরেট স্নাতক ছিলেন ভাদি। তিনি ১২ দিনের যুদ্ধের সময় নিহত দুই বিশিষ্ট পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ আব্দুলহামিদ মিনুচেহর এবং আহমেদ জোলফাগারির সঙ্গে একটি গবেষণাপত্র সহ-লেখক ছিলেন।
বিচার বিভাগ বলেছে, ভাদিকে ওই হামলায় নিহত একজন বিজ্ঞানীর সম্পর্কে গোপন তথ্য মোসাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনি জেনেশুনে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করেছিলেন।
কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, তাকে অনলাইনে নিয়োগ করেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। চূড়ান্ত নিয়োগের আগে মোসাদের একজন কর্মকর্তা তাকে যাচাই করেছিলেন। পরে কেভিন নামে পরিচিত একজন হ্যান্ডলারের কাছে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বিচার বিভাগের মতে, ভাদিকে মূল্যায়নের পর মোসাদ নির্ধারণ করে যে, কর্মক্ষেত্র এবং অ্যাক্সেসের স্তর তাকে একজন উচ্চ-মূল্যবান উৎস করে তুলতে পারে। এরপর তাকে মোসাদের শীর্ষ বিভাগগুলোর মধ্যে একটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার অনুরোধে, প্রতি মিশনের জন্য পুরস্কার ব্যবস্থার পরিবর্তে তাকে প্রতি মাসে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করা হতো।
মামলার নথিতে বলা হয়েছে, নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি ডেডিকেটেড ফোন, ল্যাপটপ এবং দুটি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ভাদিকে। এরপর প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাকে। সফল প্রশিক্ষণ শেষে সংবেদনশীল, শ্রেণিবদ্ধ তথ্য সংগ্রহ এবং প্রেরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রুজবেহ ভাদিকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।