সোয়াদ সাদমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসন ও চরম মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। তাঁর বক্তব্যে তিনি গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নিষ্ঠুর হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং সাম্প্রতিক আক্রমণে শহীদ মুসলিম নারী, শিশু ও সাধারণ জনগণের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, “গাজায় চলমান হামলা নতুন নয়, তবে এর মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে গাজাবাসীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং বিশ্বকে বার্তা দেওয়া যে এ ধরনের হামলা মানবতা-বিরোধী অপরাধ।” তিনি আরও বলেন, “শুধু আবেগ নয়, আমাদের জ্ঞান, বিজ্ঞান ও ঐক্যের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষিত ও নৈতিকতাসম্পন্ন নাগরিক তৈরি করাই দীর্ঘমেয়াদে এর উত্তম জবাব।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, “ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তা মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিশ্বে ১৪৮টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলেও জাতিসংঘ ও ওআইসি কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ওআইসি যদি নিরব থাকে, তবে এর অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।” এসময় তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন
ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় ভূমিকায় আসার আহ্বান জানিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, “মানবাধিকারের পক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আজ একত্রিত হয়েছে। শিশুহত্যা ও বর্বরতা যে কোনো সভ্য সমাজে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমাদের আজকের প্রধান দায়িত্ব—এই অপরাধের বিরুদ্ধে একটি দৃঢ় অবস্থান নেওয়া।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন, চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার সহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বক্তারা ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের নিরবতা, মুসলিম বিশ্বের বিভক্তি এবং মানবিক সহানুভূতির অভাবের তীব্র সমালোচনা করেন এবং ন্যায়ভিত্তিক একটি বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সচেতন ও কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।