লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি একটি পরিপত্র জারি করেছে, যেখানে সরকারি-বেসরকারি অফিস ও গৃহস্থালিতে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের মাধ্যমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
নতুন নির্দেশনা কী বলছে?
- সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বাড়িতে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা যাবে না।
- সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য গরমকালে স্যুট-কোট পরিধান না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- বিদ্যুৎ ব্যবহারে অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নজরদারি হবে কীভাবে?
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সরকার কীভাবে নজরদারি করবে? এ বিষয়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা জানিয়েছেন,
- প্রতিটি ফিডারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য বিশ্লেষণ করা হবে।
- স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রবণতা দেখা গেলে সরেজমিন তদন্ত করা হবে।
- যদি অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ খরচের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি অফিসগুলোতে প্রতিদিন মনিটরিং করা হবে এবং বিদ্যুৎ অপচয় হলে অফিসের প্রধান কর্মকর্তাকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির ক্ষেত্রে নজরদারির জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় লোডশেডিং বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জনপ্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
এসি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
- সমর্থন: অনেকেই বলছেন, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় এটি একটি কার্যকরী উদ্যোগ হতে পারে, বিশেষ করে সরকারি অফিস ও শপিং মলগুলোতে এই নিয়ম কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
- সমালোচনা: অনেকে বলছেন, গ্রাহক যখন বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করছেন, তখন ব্যক্তিগত ব্যবহারে সরকারের হস্তক্ষেপ কতটা যৌক্তিক?
বিশেষজ্ঞদের মতামত
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, “সরকারি অফিস ও শপিং মলে মনিটরিং হলে কিছুটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব, তবে শুধুমাত্র অনুরোধের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান আসবে না।”
অন্যদিকে, অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম মনে করেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কেবল অনুরোধ যথেষ্ট নয়, বরং সরকারকে স্থায়ী নীতি গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এসি, ফ্যান ও অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে?
সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিদিন ২-৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব হবে, যা গ্রীষ্ম ও রমজানে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সহায়ক হবে। তবে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে নির্দেশনার বাস্তবায়ন ও জনগণের সহযোগিতার ওপর।
সিলেটে রমজানে বাজার মনিটরিংয়ে উপজেলা প্রশাসন- চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
আপনার মতামত কী? এই সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় কার্যকর হবে বলে মনে করেন? মন্তব্যে জানান!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।