জুমবাংলা ডেস্ক : অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের পর তার পরিচয় শনাক্ত করতে গিয়ে ৩৭ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া আরেক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত শুক্রবার গভীর রাতে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের শিবপুর গ্রাম থেকে বিউটি বেগম (৩৫) নামে নিখোঁজ ওই নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করেন বগুড়া ডিবির সদস্যরা।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিহত বিউটির কথিত প্রেমিক উজ্জ্বল হোসেনকে (২৩)। বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম গতকাল শনিবার বিকেলে এসব তথ্য জানিয়েছেন। নিহত বিউটি বেগম বগুড়ার শিবগঞ্জের পিরব ইউনিয়নের দামগাড়া গ্রামের প্রয়াত বেলায়েত হোসেনের মেয়ে। আর তাকে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার করা উজ্জ্বল ক্ষেতলালের শিবপুর গ্রামে ইরাক প্রবাসী শাহ আলমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ মে বগুড়ার শাজাহানপুরের গ-গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ উদ্ধার হয়। পরিচয় না পাওয়ায় ওই মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারীর মরদেহের ছবি দেখে শিবগঞ্জের দামগাড়া গ্রামের প্রয়াত বেলায়েত হোসেনের ছেলে বাবলু মিয়া থানায় গিয়ে দাবি করেন উদ্ধারকৃত মরদেহ তার বোন বিউটি বেগমের।
বাবলু মিয়া পুলিশকে জানান, স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়া তার বোন বিউটি বেগম ছেলে রবিউল ইসলামকে নিয়ে বগুড়া শহরের জহুরুল নগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। গত ২১ এপ্রিল থেকে বিউটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ।
বাবলুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল বিউটি বেগমের মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে শুক্রবার উজ্জ্বল হোসেনকে আটক করা হয়। উজ্জ্বলকে বগুড়ায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বিউটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তবে শাজাহানপুরের বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করা মরদেহটি নয়, বরং বিউটির মরদেহ জয়পুরহাটে নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছে জানালে দ্বিধায় পড়ে যায় পুলিশ। এ নিয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, আসামি আমাদের দেখিয়ে দেয় সেফটিক ট্যাকংটি। আমরা সেখান থেকে অর্ধ গলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করি।
এক পর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, উজ্জল শাজাহানপুরের হত্যায় জড়িত নয়, ওই ঘটনার তিন সপ্তাহ আগে সে বগুড়ার বিউটি বেগমেকে জয়পুরহাটে তার বাড়িতে হত্যা করেছে। শনিবার উজ্জলের দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে খুনের ৩৭ দিন পর উদ্ধার করা হয় বিউটির মরদেহ। এ ঘটনায় বিউটির স্বজনরা জানান, ১৫ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে ওই গ্রামেই থাকতেন বিউটি বেগম। মোবাইলফোনে প্রেমের সূত্র ধরে ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, যে নারীর হত্যাকাণ্ডের সন্দেহে উজ্জলকে আটক করা হয়েছিল, তার পরিচয় এখনও অজ্ঞাত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।