জুমবাংলা ডেস্ক : দুই বছর আগে ২০ নভেম্বর ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ঠিক এক বছরের মাথায় ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এবারো নিরাপত্তা ঘাটতির ব্যতিক্রম হয়নি। ওই দুই ঘটনার বছর পূর্তির চার দিন আগেই ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ডাকাতি মামলার আসামি পালিয়ে গেছে।
এখন জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে, ‘নভেম্বর’ মাসেই কেন ভেঙে পড়ে আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা?
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার হাতিরঝিল থানার ডাকাতি মামলার সন্দিগ্ধ আসামি আরিফুর ইসলাম আরিফকে এক দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তিনি আদালত থেকে পালিয়ে যান। তখন আসামির দায়িত্বে ছিল পুলিশ কনেস্টবল সিরাজ ও কাজল। এই দুই পুলিশ সদস্যের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান আসামি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন বিভাগ) তারেক জুবায়ের বলেন, পালিয়ে যাওয়া আসামি আরিফের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এ ছাড়া দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ২০২২ সালে ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গেট থেকে পুলিশের ওপর পিপার স্প্রে করে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলার পর ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তবে পলাতক দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত বছরের ২০ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে মহানগর দায়রা জজ-২ আদালতের সামনে এবং মহানগর আদালতের হাজতখানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ওই দিন রাতেই রাজধানীর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ কামরুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হাফসা আক্তার পুতুল নামে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর ককটেল বিস্ফোরণের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ মুকিত ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, আসামি পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আদালত আমাদের থানাধীন এলাকা হওয়ায় আমরা ডিসি প্রসিকিউশনের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন করি। দায়িত্ব পালনে আমরা সব সময় সর্বোচ্চ সর্তক থাকি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, একজন আসামি পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া দায়িত্ব অবহেলার কারণে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমরা আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করব।
লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, জঙ্গি ছিনতাই বা বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে আসামি পালিয়ে যাওয়ার কোনো যোগসূত্র নেই। তবে অন্য মাসে না হয়ে কেন নভেম্বরে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, সেটাও তো ভাবনার বিষয়। আমরা মূলত আদালতের বাইরের অংশে নিরাপত্তার কাজ করি। তবে ডিসি প্রসিকিউশনের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সমন্বয় করি। এ ধরনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা সর্তক থাকব।
সূত্র : কালেরকণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।