বিনোদন ডেস্ক : বিতর্কে কখনও নিজের নাম জড়াননি, এমন অভিনেত্রীর কথা বলতে গেলে প্রথমেই যে নাম সবার প্রথমে আসে তিনি বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখার্জি। ক্যারিয়ারে কাজ করতে গিয়ে প্রেমে পড়েছিলেন বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চনের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে না বিয়ে করে যশরাজের কর্ণধার আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করেন তিনি। এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কী কারণ লুকিয়ে ছিল তা অনেকেরই অজানা।
টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে কলকাতার সিনেমা ‘বিয়ের ফুল’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় রাখেন রানি। এরপর বলিউডে পা রাখেন ‘রাজা কি আয়েগি বারাত’ সিনেমা দিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
নব্বইয়ের দশক থেকে চুটিয়ে কাজ করেছেন হিন্দি সিনেমায়। কাজ করতে গিয়ে এক সময় বন্ধুত্ব তৈরি হয় অমিতাভ পুত্র অভিষেকের সঙ্গে। বন্ধুত্ব গিয়ে গড়ায় প্রণয়ে। কিন্তু এ খবর অভিষেকের মা জয়া বচ্চনের কানে পৌঁছতেই তিনি রেগে লাল হয়ে ওঠেন।
রানি আর অভিষেকের সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নেননি জয়া। তিনি কখনই চাননি রানির সঙ্গে তার ছেলের ঘনিষ্ঠতা বাড়ুক। যে কারণে রানিকে সরাসরি জয়া বলেছিলেন, নিজের ছেলে থেকে দূরে থাকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অভিষেক বলিউড নায়িকা কারিশমা কাপুরের প্রেমে সেসময় হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। আর রানি ছিলেন তার ভালো বন্ধু। কিন্তু রানি অভিষেককে বন্ধু চেয়েও বেশি কিছু ভেবেছিল।
কারিশমার পরিবার ছাড়াই মেয়ের আঙুলে অমিতাভ এনগেজমেন্ট আংটি পরিয়ে দিলে এ ইস্যু নিয়ে শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভেঙে যায় অভিষেক-কারিশমার। যখন বাবা অমিতাভের কারণে কারিশমা-অভিষেকের বিয়ে ভেঙে যায় তখন রানির প্রতি দুর্বল হতে শুরু করেন অভিষেক। কিন্তু জয়া এটা কখনও মেনে নেননি। যে কারণে বাড়তে শুরু করে জয়া-রানির সম্পর্কের তিক্ততা।
সর্বশেষ জয়া-রানির সম্পর্কের তিক্ততা বাড়তে শুরু করে ‘লাগা চুনারি মে দাগ’-এর শুটিং সেটে। এ সিনেমায় রানির মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন জয়া।
জানা গেছে, এ সিনেমার শুটিংয়ে প্রায়ই রানিকে খোঁচা মেরে কথা বলতেন জয়া। যে কারণে সে সময় সেটে একসঙ্গে রানি আর জয়ার শুটিং থাকলেই উত্তেজনা কাজ করতো পরিচালকের।
এমন পরিস্থিতিতে রানি অভিষেক থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। মায়ের কারণে ছেলে অভিষেকও রানির থেকে দূরে সরে যান। এদিকে বাবা অমিতাভের পছন্দেই অভিষেক দুর্বল হতে শুরু করে বলিউডের আরেক নায়িকা ঐশ্বরিয়ার প্রতি।
এতে ভীষণ ভেঙে পড়েন রানি। এদিকে জয়া ‘লাগা চুনারি মে দাগ’-এর রিলিজের আগেই ছেলের বিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ২০০৭ সালে ২০ এপ্রিল জমকালো আয়োজনে ঐশ্বরিয়াকে বিয়ে করেন অভিষেক।
এ বিয়েতে বলিউডের অনেক তারকার উপস্থিতি থাকলেও রানি ওই বিয়েতে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর ২০০৭ সালের ১২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘লাগা চুনারি মে দাগ’ সিনেমা। চুনড়ি বা ওড়নার দাগের মতো না বলা ভালোবাসা ভেঙে যাওয়ায় হৃদয়েও দাগ পড়ে রানির।
এরপর ক্যারিয়ারে সময় দিতে শুরু করেন মিষ্টি এ নায়িকা। তখন মানসিকভাবে ভীষণই ভেঙে পড়েছিলেন রানি। তাকে সামলাতে তখন এগিয়ে এসেছিলেন যশরাজ ফিল্মসের কর্ণধার আদিত্য। যদিও বিবাহিত ছিলেন আদিত্য কিন্তু তিনিও রানিকে অনেক আগে থেকেই নিরবে ভালোবেসে আসছিলেন। অভিষেকের বিয়েতে রানিকে সামলাতে গিয়ে নিজের মনের কথা প্রকাশ্যে আনেন আদিত্য।
বিয়ের সম্পর্কে জড়াতে দীর্ঘ ৭ বছর সময় নেন। এ ৭ বছরে রানি আদিত্যর মধ্যে খুঁজে পান তাকে ভালোবাসার অসংখ্য গুণ। কখনও নিজের জীবন নিয়ে মুখ না খুললেও সম্প্রতি রানি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আদি খুব স্বচ্ছ মানুষ। ওর নীতিবোধ ও নেতৃত্ব গুণ আমাকে অনেক টানে। যেটা অন্য কারো মধ্যে আমি দেখিনি।
রানি আরও বলেন, প্রিয়জনকে আগলে রাখতে, ভরসা হয়ে তার পাশে থাকতে জানে আদিত্য। তাই ইন্ডাস্ট্রিতে অন্য কাউকে নয়, আদিত্যকেই বিয়ে করেছি। রানির এমন কথায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে অভিষেকের মধ্যে যে গুণ রানি দেখেনি, সে গুণগুলো দিয়েই রানিকে বশ করতে পেরেছিলেন আদিত্য।
প্রসঙ্গত, রানিকে বিয়ে করতে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন আদিত্য চোপড়া। এরপর লোকচক্ষুর আড়ালে ইতালিতে গিয়ে বিয়ে সারেন। বিয়েতে পোশাকশিল্পী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইনের পোশাকে সেজেছিলেন রানি-আদিত্য। কঠোর গোপনীয়তা রাখায় তাদের বিয়ের ছবি কিংবা কোনো ভিডিও আজও প্রকাশ্যে আসেনি নেটদুনিয়ায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।