জুমবাংলা ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সর্বত্র সড়কের পাশের গাছে গাছে পেরেক বা তারকাঁটা ঠুকে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। এতে সড়কের গাছগুলো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গাছ পরিবেশ ও মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলেও মানুষের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
প্রায় প্রতিদিনই পেরেক ঠুকে লাগানো হচ্ছে শুভেচ্ছা ব্যানার, ছাত্রভর্তি, চিকিৎসাসেবা, বাড়িভাড়া, হারবাল ওষুধ বিক্রির বিজ্ঞাপন।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকা, মুন্সিবাজার, শমশেরনগর, আদমপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার রাস্তার পাশের গাছের কোনো অংশ এখন আর ফাঁকা নেই। রাস্তার পাশের গাছগুলোতে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। লোহার পেরেক ঠুকে এগুলো টাঙানো হয়েছে।
রাস্তার পাশের গাছগুলোতে তাকালেই চিকিৎসক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কোচিং বাণিজ্যালয় ও শুভেচ্ছা বাণীসহ বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড চোখে পড়ছে। রাস্তার পাশে গাছ থাকলেই তাতে টাঙানো হচ্ছে সাইনবোর্ড, ব্যানার কিংবা প্ল্যাকার্ড। বিনা খরচে, কোনো প্রকার বাঁধা ছাড়াই প্রাতিষ্ঠানিক পণ্যের প্রচারণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে গাছ।
গাছে পেরেক ঠুকে এসব লাগানো আইনসম্মত না হলেও তা কেউ মানছে না। গাছের গায়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শত শত সাইনবোর্ডের কারণে একদিকে যেমন গাছগুলো ঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। তেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ অবস্থা তৈরি হয়েছে সাত-আট বছর আগ থেকে। এর আগে হাতেগোনা দু-একটি ছাড়া খুব বেশি সাইনবোর্ড চোখে পড়ত না। সম্প্রতি গাছে সাইনবোর্ড বেশি চোখে পড়ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদদের সাইনবোর্ডের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।
নববর্ষ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষেও রাজনীতিবিদদের শুভেচ্ছা সাইনবোর্ড দেখা গেছে। তাছাড়া নতুন নতুন চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচিতি জানান দিতে এখন গাছে গাছে লোহা দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখছেন। স্কুল কলেজের সামনের গাছগুলোতেও টাঙানো হচ্ছে বিভিন্ন চিকিৎসক ও হোমিওপ্যাথিক প্রতিষ্ঠানের নারী-পুরুষের বিশেষ অঙ্গের চিকিৎসার সাইনবোর্ড। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
কমলগঞ্জ পরিবেশবাদী নুরুল মোহাইমিন মিল্টন ও মঞ্জুর আহমদ আজাদ মান্না বলেন, গাছ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, গাছ মারা যাচ্ছে তারকাঁটার আঘাতে। বিজ্ঞান বলছে গাছের জীবন আছে। যেহেতু গাছের জীবন আছে সেহেতু তার ব্যথা যন্ত্রণাও আছে। গাছে পেরেক ঠুকলে তার খাবার সংগ্রহে বাধা তৈরি হয়। তাছাড়া পেরেক ঠুকা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন অণুজীব প্রবেশ করে গাছটি ধীরে ধীরে মরে যেতে পারে। গাছ বাঁচাতে গাছে পেরেক না ঠুকার অনুরোধ জানান তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।