জুমবাংলা ডেস্ক : মামলায় জিতে দীর্ঘ ২০ বছর পর প্রধান শিক্ষকের পদ ফিরে পেলেন পঞ্চগড়ের আকবর হোসেন। যোগ দিলেন নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান নয়নীবুরুজ দীঘলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অনেক দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত আকবর হোসেন ন্যায়বিচার পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।
১৯৯২ সালে পঞ্চগড় সদরে নয়নীবুরুজ দীঘলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেন। ২০০৩ সালে পারিবারিক মামলায় ৩ মাস কারাগারে থাকার পর, জামিন পেলেও স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। প্রধান শিক্ষক করা হয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির ভাতিজার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে।
২০০৪ সালে এ নিয়ে মামলা করেন আকবর হোসেন। মামলায় আকবরকে স্বপদে বহাল ও বকেয়া বেতন শোধের নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর মামলা, আপিল আর পাল্টা আপিলের মধ্যেই কেটেছে ২০ বছর। আইনি জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত পদ ফিরে পেলেন এই সংগ্রামী শিক্ষক।
পদ ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে শিক্ষক আকবর হোসেন বলেন, ‘৯ মাসের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু আমি আমার চাকরি ফিরে পেতে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যুদ্ধ করছি। এজন্য বর্তমান শিক্ষা অফিস সহায়তা করেছেন। বর্তমান শিক্ষা অফিসার থাকলে আমি অনেক আগেই চাকরি ফিরে পেতাম।’
এ ব্যাপারে আকবর হোসেনের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আকবর হোসেনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানে উচ্চ আদালতের নির্দেশ না মানায় জারি মামলা করা হয়। এরপর বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হলেও তারা কোনো জবাব না দেওয়ায় আদালত গত ২৯ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ারা জারি করেন। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা কাগজপত্র যাচাই করে তাকে বিদ্যালয়ে যোগদান করায়।’
দীর্ঘ সময় পর আকবর হোসেনের প্রধান শিক্ষক পদ ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘৩ মাস জেলে থাকায় সেই সময়ে ম্যানেজিং কমিটি ও তৎকালীন অফিসার তাঁকে চাকরিচ্যুত করেন। এরপর সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের আদেশ মতে তাঁকে আবারও প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করানো হয়।’
প্রধান শিক্ষক হিসেবে আকবর হোসেনকে ফিরে পেয়ে খুশি সহকর্মী ও অভিভাবকরা।
আকবর হোসেনের সহকর্মী নয়নী বুরুজ দীঘলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. গোলাম আজম বলেন, ‘তিনি কষ্ট করে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। এরপর তিনি পঞ্চগড় থেকে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট হয়ে আবার চাকরি ফেরত পেয়েছেন। এজন্য আমরা সকলেই খুশি।’
স্থানীয় অধিবাসী ও পরিচালনা কমিটির সদস্য সতীশ চন্দ্র বলেন, ‘দীর্ঘ ২০–২১ বছর মামলার কারণে তিনি বাইরে ছিলেন। মামলা পরিচাল করতে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তিনি আবার যোগদান করায় আমরা এলাকাবাসী খুশি।’
তাঁকে আবারও যোগদানের জন্য আপিল বিভাগের নির্দেশ ৬ মাসেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালক, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপরই ২ নভেম্বর তড়িঘড়ি করে যোগদান করানো হয় আকবর হোসেনকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।