বিনোদন ডেস্ক : বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নন্দিত অভিনেতা আফজাল হোসেন। এই শিল্পীর রুচিবোধ, পোশাকের স্টাইল, নিজেকে উপস্থাপনের ভঙ্গি সবই অনুকরণীয় নবীনদের কাছে। আজও তরুণদের ফ্যাশন আইকন হিসেবে অনুসরণীয় রয়েছেন আফজাল হোসেন।
জীবনের ৬৮ বসন্তে আরো একবার চমকে দিলেন তিনি। সম্প্রতি আফজাল হোসেনের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেন রায়নো আরিয়ান খান নামের এক ব্যক্তি। মুহূর্তেই সেসব ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিগুলো দেখলে প্রথমে কারো বিশ্বাসই হবে না কিছুদির পরেই ৬৯ বছরে পা রাখবেন আফজাল হোসেন।
ছবিগুলো পোস্ট করে ওই ব্যক্তি লেখেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মেগাস্টার অফ দ্যা মিলেনিয়াম অমিতাভ বচ্চন স্যার ৭৮ বছর বয়সে, তুখোড় অভিনেতা অনুপম খের স্যার ৬৭ বছর বয়সে, পারেশ রাওয়াল স্যার ৬৭ বছর বয়সে, নানা পাটেকার ৭২ বছর বয়সে, আন্নু কাপুর স্যার ৬৭ বছর বয়সে, বোমান ইরানী স্যার ৬৩ বছর বয়সে, নাসিরউদ্দিন শাহ স্যার ৭২ বছর বয়সে, পিয়ুশ মিশরা ৬৪ বছর বয়সে তাদের চলচিত্রে আজও নায়কের চরিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছে এবং জাতীয় পুরষ্কারসহ নানা পুরষ্কারে সম্মানিত হচ্ছেন।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশে আমরা আমাদের স্বর্নালী যুগের অভিনেতাদের খোঁজ খবর নেওয়া তো দূরের কথা তাদের নামই মনে নেই। এক সময় তাদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম দ্বারা বাংলাদেশের স্বর্নালী যুগের ইতিহাস লেখা হয়েছিল। চলুন না আরেকবার সবাই মিলে তাদেরকে ফিরিয়ে আনি। দরকার তো শুধু ভালো গল্প, ভালো চরিত্র, ভালো নির্মাণ আর দলবদ্ধ চেষ্টা।
এদিকে সম্প্রতি তরুণ নির্মাতা কামরুল ইসলাম রিফাতের চলচ্চিত্র ‘ওয়ান ইলেভেন’-এ যুক্ত হয়েছেন আফজাল হোসেন। যেখানে এই বরেণ্য অভিনেতাকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে। শিগগিরই সিনেমাটির কাজ শুরু হবে।
‘ওয়ান ইলেভেন’র গল্প হুমায়ুন কবির বিশ্বাসের। সংলাপ মোজাফফর হোসেনের। আর চিত্রনাট্য সংশোধন ও পরিমার্জন করেছেন চলচ্চিত্রকার যুগল নূরুল আলম আতিক ও মতিয়া বানু শুকু।
এছাড়া গেল ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ করেছেন ‘একা’ নামের আরেকটি সিনেমার কাজ। এতে তার স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে দীপা খন্দকারকে। ফরিদুর রেজা সাগরের ‘একা’ গল্প অবলম্বনে এটি পরিচালনা করেছেন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী।
জানা গেছে, রাজধানীর ধানমন্ডি, কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া, রাজেন্দ্রপুরের নক্ষত্রবাড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে সিনেমাটির দৃশ্যধারণ শেষ হয়েছে। শুরুতে সিনেমার নাম ছিল ‘অপরাজেয়’। পরে নাম পাল্টে রাখা হয়েছে ‘একা’। এতে আরো অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ, ঝিলিক জান্নাত প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৪ সালের ১৯ জুলাই সাতক্ষীরার পারুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আফজাল হোসেন। তবে সনদ অনুযায়ী তার জন্মদিন ২৭ মার্চ।
টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে বেশ জনপ্রিয় হলেও আফজাল হোসেনের অভিনয় জীবনের শুরু মঞ্চে। চারুকলায় পড়ার সময় ঢাকা থিয়েটারের মাধ্যমে মঞ্চে কাজ শুরু করেন তিনি। সত্তরের দশকের শেষ দিকে টেলিভিশন জগতে প্রবেশ তার। আশির দশকে হয়ে ওঠেন টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় এক নাম।
১৯৮০ সালে প্রচারিত ‘রক্তের আঙ্গুরলতা’ টেলিভিশন নাটকে তিনি নিয়ে আসেন নতুন ধারা, নতুন ভাবনা। ‘পারলে না রুমকি’ নাটকটি বিটিভির নাটকের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে আছে আজও।
মডেলিং ও বিজ্ঞাপনচিত্রকে শিল্প পর্যায়ে উন্নীত করেছেন এই তারকা। একটি পণ্যকে ভোক্তার কাছে উপস্থাপন করার যে পথ তিনি দেখিয়েছেন, সে পথ ধরেই বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনচিত্রের আজ এত দূর এগিয়ে আসা।
শিল্পকলার অভিনয় শাখায় অবদানের জন্য আফজাল হোসেন ২০২২ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।