লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। আর এই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বাংলাদেশের চাকরির বাজারেও। পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল দেশ বাংলাদেশে প্রতিবছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েট হয়ে বের হচ্ছেন।
কিন্তু চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে তরুণদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে প্রযুক্তির হাত ধরে। আগামী পাঁচ বছরে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে যে পাঁচটি পেশায় তরুণদের চাকরি নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, সেগুলো তুলে ধরা হলো :
১. ডাটা অ্যানালিটিক্স ও বিগ ডাটা এক্সপার্ট
বিশ্বজুড়ে ডাটা এখন সবচেয়ে বড় সম্পদ। ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে শুরু করে বিপণন পরিকল্পনা, সবকিছুতেই ডাটাভিত্তিক সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও ব্যাংক, টেলিকম, ই-কমার্স, ফিনটেকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডাটা অ্যানালিটিক্স ও বিগ ডাটা এক্সপার্টদের চাহিদা বাড়ছে। আগামী পাঁচ বছরে এই খাতে দক্ষ তরুণদের চাকরি পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত।
২. সফটওয়্যার ডেভেলপার ও অ্যাপ ডেভেলপার
বিশ্বজুড়ে সফটওয়্যার ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সেক্টর দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। দেশীয় আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মেও বাংলাদেশি তরুণদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এবং ক্লাউড-ভিত্তিক সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে দক্ষতা থাকলে আগামী পাঁচ বছর চাকরির নিশ্চয়তা অনেকটাই হাতের মুঠোয়।
৩. ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও স্পেশালিস্ট
অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা বাংলাদেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দেশীয় কোম্পানির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্যও ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) বিশেষজ্ঞদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল—এসব প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন পরিচালনা, কনটেন্ট মার্কেটিং এবং এসইও নিয়ে দক্ষতা অর্জন করলে তরুণদের জন্য চাকরির বাজার উজ্জ্বল হবে।
৪. সাইবার সিকিউরিটি ও আইটি অডিট এক্সপার্ট
ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইবার হামলা এবং তথ্য চুরি বাড়ছে। ব্যাংক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা—সবখানে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের গুরুত্ব বেড়েছে। আগামী পাঁচ বছরে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং আইটি অডিট এক্সপার্টদের চাহিদা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
৫. ক্রিয়েটিভ কনটেন্ট ক্রিয়েটর (ভিডিও, অ্যানিমেশন, গ্রাফিক্স)
ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট ক্রিয়েটরের গুরুত্ব বাড়ছে। গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, অ্যানিমেশন, মোশন গ্রাফিক্স—এসব ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করলে তরুণরা নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ফুলটাইম বা ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগও বাড়ছে।
কেন এই পাঁচটি পেশা গুরুত্বপূর্ণ?
- প্রযুক্তিনির্ভর এই পেশাগুলোর চাহিদা বিশ্বজুড়ে বাড়ছে।
- দেশে-বিদেশে কাজের সুযোগ রয়েছে, তাই চাকরি এবং আয়ের নিরাপত্তা বেশি।
- ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই আয় করার সুযোগ থাকায় তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে।
- দক্ষতা অর্জন করতে বেশি সময় লাগে না, অনলাইনে সহজেই শেখা যায়।
- সঠিক প্রশিক্ষণ এবং পরিশ্রম করলে দ্রুত ভালো বেতন ও ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা।
চাকরির নিশ্চয়তা পেতে করণীয় :
- অনলাইনে বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স করে আপডেট থাকা।
- প্রযুক্তির নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা।
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতা বাড়ানো।
- ফ্রিল্যান্সিং এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করা।
বাংলাদেশের তরুণদের জন্য এই পাঁচটি পেশা আগামী পাঁচ বছর প্রযুক্তির হাত ধরে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। সঠিক প্রস্তুতি নিলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে তাদের জন্য চাকরি পাওয়া সহজ হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।