যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI-এর ব্যাপক ব্যবহার বিদ্যুতের গ্রিডে চাপ সৃষ্টি করছে। Bloomberg-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, Northern Virginia, Chicago-এর মতো এলাকায় এই সমস্যা প্রকট। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এতে বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলও বাড়তে পারে।
এই সমস্যার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে AI সেবা দেওয়া ডেটা সেন্টারগুলোকে। Whisker Labs এবং DC Byte-এর মতো প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে, এই ডেটা সেন্টারগুলো পুরনো বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের বাড়িতেও বিদ্যুতের গুণগত মান কমছে।
কীভাবে AI বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটায়?
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে Whisker Labs-এর Ting ডিভাইসের ডেটা উদ্ধৃত করা হয়েছে। এই ডিভাইসগুলো বাড়ির বিদ্যুতের মান পর্যবেক্ষণ করে। সেখানেই ধরা পড়েছে ‘খারাপ হারমনিক্স’ বা বিদ্যুতের অনিয়মিত তরঙ্গের সমস্যা।
ডেটা সেন্টারগুলোর আকস্মিক ও প্রচণ্ড বিদ্যুৎ চাহিদার কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। এতে ভোল্টেজ অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করে। এই সমস্যা ডেটা সেন্টার থেকে ৫০ মাইলের মধ্যে থাকা প্রায় ৩৭ লক্ষ আমেরিকানকে প্রভাবিত করছে।
বিদ্যুতের খারাপ মানের বিপদ
বিদ্যুতের গুণগত মান খারাপ হলে শুধু বিভ্রাটই হয় না। বাড়ির মূল্যবান ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে। এমনকি, বৈদ্যুতিক অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে দাবানলের ঝুঁকি বেশি, সেখানে বৈদ্যুতিক স্পার্ক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই শুধু বিদ্যুৎ থাকা না থাকার প্রশ্নই নয়, এর গুণগত মান নিশ্চিত করাও জরুরি।
সমাধানের পথ কী?
এই সংকট মোকাবেলায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে। যেমন, Virginia-তে নতুন ডেটা সেন্টারগুলোর জন্য আলাদা সাবস্টেশন বানানোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ লাইনে চাপ কমবে।
এছাড়াও, Exowatt-এর মতো স্টার্টআপ ক্লিন এনার্জি ব্যবহার করে ডেটা সেন্টার চালানোর মডুলার সিস্টেম বানানোর চেষ্টা করছে। তবে দ্রুত AI-এর প্রসার ঘটায় দীর্ঘমেয়াদি ও বড় পরিসরের সমাধান খুঁজতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
AI-এর এই দ্রুত সম্প্রসারণ শুধু ডিজিটাল বিশ্বই নয়, বদলে দিচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনও। বিদ্যুৎ খাতের ওপর এর প্রভাব একটি স্পষ্ট উদাহরণ। ভবিষ্যতে এই চাপ মোকাবেলায় জ্বালানি খাতে বড় রকমের বিনিয়োগ ও নীতিগত পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে উঠতে পারে।
জেনে রাখুন-
Q1: AI কীভাবে বিদ্যুৎ বিল বাড়ায়?
ডেটা সেন্টারগুলোর অত্যধিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণে পুরো গ্রিডে চাপ পড়ে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ খরচ বাড়লে ভোক্তাদের বিলও বাড়ে।
Q2: ‘খারাপ হারমনিক্স’ কী?
এটি বিদ্যুতের অনিয়মিত তরঙ্গ। এতে ভোল্টেজ হঠাৎ করে বেড়ে বা কমে যায়। এর ফলে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ক্ষতি হয়।
Q3: এই সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় কী?
বাড়িতে সার্জ প্রোটেক্টর ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর আধুনিকীকরণ জরুরি।
Q4: বাংলাদেশে কি এমন সমস্যা হতে পারে?
বাংলাদেশে বড় আকারের AI ডেটা সেন্টার এখনও তেমন নেই। তবে ভবিষ্যতে প্রযুক্তির বিস্তার ঘটলে বিদ্যুৎ খাতকে প্রস্তুত করতে হবে।
Q5: AI কি বিদ্যুৎ খাতের জন্য ভালোও?
হ্যাঁ, AI টপোলজি অপ্টিমাইজেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রিডের কার্যকারিতা বাড়াতেও সাহায্য করতে পারে। এটি একটি ইতিবাচক দিক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।