স্পোর্টস ডেস্ক : গ্যাব্রিয়েল মন্টিয়েলের শট গোললাইন পার হতেই লুসাইলে বাঁধভাঙা উল্লাস। ততক্ষণে লিওনেল মেসিও হাঁটুগেড়ে বসে পড়েন; দুচোখ মুছতে মুছতে পারদেস, অ্যাকুনা, ফার্নান্দেজ আর ওটামেন্ডি হাজির। এর পর মেসিকে জড়িয়ে চলে খানিকটা উদযাপন। আরেকদিকে বল জালে পাঠিয়ে জার্সি দিয়ে মুখ ঢেকে আনমনা হয়ে ছুটতে থাকা মন্টিয়েলকে ছুঁয়ে উদযাপন সারেন দিবালা এবং বেঞ্চের কয়েকজন।
ক্যামেরার ফ্রেম এর মধ্যে খুঁজে নেয় চ্যাম্পিয়নদের নেপথ্যের নায়ক লিওনেল স্কালোনিকে। খানিকটা অবাকই মনে হয় তাঁকে। শুরুতে অপলক দৃষ্টিতে চেয়েছিলেন মাঠের দিকে, এর পর বোধ হয় চোখের জল লুকাতে বসেন ডাগআউটের বেঞ্চে। কিন্তু এমন দিনে আনন্দাশ্রু লুকানো গেলে তো। স্টাফরা এক এক করে তাঁর সঙ্গে উদযাপন করেন। তাঁকে যেন বোঝাতে চান ‘তোমার জন্যই সম্ভব হলো। আজকের দিনটি শুধুই তোমার।’
কিন্তু কিছুতেই স্কালোনির ভ্রম কাটছে না। মনে হয় চিমটি কেটেও দেখেছেন, যা হলো সেটা আসলেই সত্যি তো! বিশ্বজয়, এমন অনেক কিছুই হওয়া স্বাভাবিক। দিনটি ১৮ ডিসেম্বর। না আজকের দিন নয়, তারিখ এক হলেও বছরটা ছিল ২০২২। হ্যাঁ, দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেছে, আর্জেন্টিনার স্বপ্নের শিরোপা জেতার।
নানা কারণে কাতার বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার জন্য ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। একদিকে ৩৬ বছরের আক্ষেপ, আফসোস আর বেদনার স্তূপ। আরেকদিকে মেসির শেষ। সব মিলিয়ে সতীর্থরা খুব করে চেয়েছিলেন যুদ্ধটা কাতারেই শেষ করতে। টুর্নামেন্টের আগেও বেশ কয়েকজন এ নিয়ে কথা বলেন। সবার কণ্ঠে লড়াইয়ের একটা বার্তা ছিল। এর পর যখন সৌদি আরবের সঙ্গে যাত্রাতে ধাক্কা খায় আর্জেন্টিনা, তখন আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরে দলটি।
গোলপোস্ট নিয়ে যে চিন্তা ছিল, সেটাও ভুলিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নামের এক বাজপাখি। পেনাল্টি আটকে দেওয়া, দুর্দান্ত সব সেভ; সব শেষ ফাইনালের একেবারে অন্তিম সময়ে মুয়ানির ম্যাজিক্যাল এক শট থামিয়ে জানিয়ে দেন ট্রফিটা তারা নিতেই এসেছেন।
তার আগের গল্পও ছিল রোমাঞ্চে ঠাসা। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে কী দুর্দান্ত এক ম্যাচ উপহার দেন মেসিরা। ম্যাচের মিনিটে মিনিটে বদলে যায় দৃশ্যপট। কখনও ডাচদের মুখে হাসি, কখনও আকাশি-সাদাদের মাথায় হাত। ঘন ঘন বদলাতে থাকা সেই ম্যাচের জয়ের বইয়ে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের চিহ্নটা আর্জেন্টিনাই আঁকে। ফাইনালের শুরু আর শেষও হয় নাটকীয়তায়। যেখানে প্রথমার্ধে ছিল মেসিদের দাপট। কিন্তু হঠাৎ সেই ম্যাচ নিজেদের করে নেয় ফরাসিরা। নায়কের আসনে বসার পথে ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। এর পর ঠিকই সেই পথ ভেঙে জয়ের মশাল উড়ায় আর্জেন্টিনা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।