২০২৫ সালে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অভাবনীয় গতিতে কর্মক্ষেত্র বদলে দিচ্ছে। যে দক্ষতাগুলো একসময় চাকরির নিশ্চয়তা দিত, সেগুলো এখন গুরুত্ব হারাচ্ছে। এমন অনেক কাজ, যা সম্পন্ন করতে মানুষের ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিশ্রম করতে হতো, সেসব এখন তুড়িতেই করে দিচ্ছে এআই। এর ফলে নিয়োগদাতাদের চাহিদাও বদলে যাচ্ছে।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময় এসেছে পুরোনো কিছু ‘স্কিল’ শেখার পেছনে না দৌড়ে বরং নতুন যুগের প্রয়োজনীয় টুলস শেখায় সময় ব্যয় করা উচিত।
চলুন দেখে নেওয়া যাক — ২০২৫ সালে কোন ৫টি টেক স্কিলে আর সময় বিনিয়োগ করা উচিত নয়:
ডাটা এন্ট্রি — এখন এআই করছে সব
একসময় দক্ষিণ এশিয়ায় ডাটা এন্ট্রি ছিল একটি বড় কর্মক্ষেত্র। কিন্তু চ্যাটজিপিটি, গুগল জেমিনি এবং মাইক্রোসফট কো-পাইলটের মতো এআই টুল এখন এই কাজগুলো করছে মুহূর্তেই।
ইউআইপাথ ও জাপিয়ের-এর মতো সফটওয়্যার সেকেন্ডের মধ্যেই ডকুমেন্ট বা ইমেইল থেকে তথ্য স্ক্যান, সাজানো ও সংরক্ষণ করতে পারে মানুষের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভুলভাবে।
যদি এখনো ম্যানুয়াল ডাটা এন্ট্রি শেখার মধ্যে থাকেন, তবে এখনই দিক পরিবর্তন করে এআই ডাটা ম্যানেজমেন্ট বা ওয়ার্কফ্লো অটোমেশন শেখা শুরু করুন। বেসিক গ্রাফিক ডিজাইন — ক্যানভ্যা আর ফায়ারফ্লাই-ই এখন ডিজাইনার!
ক্যানভ্যা ম্যাজিক স্টুডিও, অ্যাডোবি ফায়ারফ্লাই ও ফোটোর এআই এখন কয়েক মিনিটেই সম্পূর্ণ ব্র্যান্ডিং কিট, পোস্টার কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ডিজাইন বানাতে পারে। শুধু একটি লোগো বা ইউটিউব থাম্বনেইল বানাতে আর ফটোশপ শেখার প্রয়োজন নেই।
যদিও সৃজনশীল আইডিয়া ও ব্র্যান্ডের গল্প বলার দক্ষতা এখনো মানুষের প্রয়োজন; কিন্তু রিসাইজ, ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ বা লেআউট ব্যালেন্স করার মতো কাজ এখন পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়।
এখন গুরুত্ব দিন ইউআই/ইউএক্স ডিজাইন, মোশন গ্রাফিকস, কিংবা ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজি শেখায়।
বেসিক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট — কোড না লিখেই সাইট বানানো যায়
একসময় এইচটিএমএল বা সিএসএস জানলেই চাকরি পাওয়া যেত, সেই যুগ এখন গত হয়েছে। ওয়েবফ্লো, বাবল ও ফ্রেমার-এর মতো নো-কোড প্ল্যাটফর্মে এখন যে কেউ কোড না লিখেই সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারছে।
এমনকি ছোট ব্যবসাগুলোও এআই-এর সহায়তায় ই-কমার্স সাইট বানিয়ে নিচ্ছে কয়েক ঘণ্টায়।
তাই এবার শিখুন ওয়েব ডিজাইন, অটোমেটেড অ্যাপ বিল্ডিং বা ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের দিকে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট — পোস্ট লেখা, টাইমিং, সব করছে এআই
আগে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারদের পোস্ট লেখা, সময় নির্ধারণ, এনগেজমেন্ট বিশ্লেষণ—এসব করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগত।
এখন বাফার এআই, হুটস্যুট আউলিরাইটার ও মেটা ক্রিয়েটর স্টুডিও কাজ করছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এই টুলগুলো এখন পোস্ট লেখে, হ্যাশট্যাগ সাজেস্ট করে, এমনকি পোস্ট করার সেরা সময়ও বলে দেয়।
এখনকার চাহিদা এআই-চালিত কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, ডাটা অ্যানালিটিক্স, এবং কমিউনিটি এনগেজমেন্ট।
সিম্পল ভিডিও এডিটিং — রানওয়ে এমএল-ই এখন এডিটর!
ভিডিও কাটাছাঁটা, রঙ ঠিক করা বা ক্যাপশন যোগ করা-এসব বেসিক এডিটিং কাজ এখন রানওয়ে এমএল, ডেস্ক্রিপ্ট ও পিকা ল্যাবস-এর মতো টুল মুহূর্তেই করে দিচ্ছে।
এখনকার কনটেন্ট ক্রিয়েটররা টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের জন্য কয়েক মিনিটেই এআই দিয়ে ভিডিও বানাচ্ছেন।
তাই শুধু ম্যানুয়াল এডিটিং শেখার বদলে, অ্যাডভান্সড স্টোরিটেলিং, এআই-সাপোর্টেড পোস্ট-প্রোডাকশন ও ক্রিয়েটিভ ডিরেকশন শেখাই হবে ভবিষ্যতের স্কিল।
এআই এখন শুধু সহায়ক নয়, বরং কর্মক্ষেত্রের রূপকার। পুরনো দক্ষতা আঁকড়ে না থেকে নতুন যুগের প্রযুক্তি বুঝে দক্ষতা বাড়ানোই হবে ২০২৫-এর সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।